ঢাবি: বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার মাত্র তিনটি রান। মাহমুদ্দুল্লাহ ব্যাট হাতে প্রস্তুত।
হ্যাঁ ! বল বিদ্যুৎ গতিতে সীমানার বাইরে!! সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পা রাখলো অবিশ্বাস্য এক বিজয়ের বন্দরে।
সারা বাংলাদেশের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ফেটে পড়ল আনন্দে। সহস্র কণ্ঠস্বরের সম্মিলিত উচ্ছ্বাস ঢাবির আকাশেÑবাতাসে সৃষ্টি করলো বজ্রধ্বনির। সবার নৃত্যের তালে তালে পায়ের নীচে অনুভূত হচ্ছিল ভূকম্পন।
একজন জড়িয়ে ধরছে আরেক জনকে। আনন্দের অতিশয্যে কেউ কেউ গড়াগড়ি খেতে থাকে মাটিতে ।
কেউ বাজাচ্ছে ঢোল, কারো হাতে ভুভুজেলা। গড়িগুলোতে সমস্বরের বেজে ওঠে হর্ন। একসঙ্গে ফুটছে অসংখ্য পটকা।
এরপর জনসমুদ্র পরিণত হলো বিশাল এক বিজয় মিছিলে। শুধু ঢাবিতেই নয় পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শত শত মিছিল প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে ক্যাম্পাস। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, যা বাংলার যে কোন উৎসবকেও হার মানিয়ে দেয়।
ঢাবির সবকটি হল থেকে দলে দলে শিক্ষার্থী মিছিলে এসে যোগ দিল । সবার আনন্দের উপলক্ষ একটাইÑবাংলাদেশের বিজয়।
শামসুন্নাহার হলে কাজ করেন মাসুদ। তিনিও যোগ দিয়েছেন মিছিলে। পরনে টাইগার দের জার্সি, গালে পতাকার আলপনা। সারা গা লাল সবুজ পতাকায় আচ্ছাদিত করে আকাশের দিকে মুখ করে বার বার উল্লাস করছেন ।
তেজগাঁ থেকে খেলা দেখতে আসা আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘টিএসসিতে বড় পর্দায় খেলা দেখতে সব সময়ই আসি। এখানে খেলা দেখতে অন্য রকম মজা। তবে বাংলাদেশ জয় পাওয়ায় আনন্দ আরো বেড়ে গেলো। ’
টিএসসিতে বড় পর্দায় খেলা দেখতে আসা ঢাবি শিক্ষার্থী গালিব আশরাফ খেলা শেষে বাংলানিউজকে বলেন, ‘মুদ্রার এপিট ওপিটের মতো খেলায়ও রয়েছে হার-জিত। তাই আজ যেমন জয়ের আনন্দে উল্লাস করছে তেমনি পরের খেলায় বাংলাদেশ হেরে গেলেও দলকে সাপোর্ট দিয়ে যেতে হবে। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে খেলা দেখেন ঢাবি শিক্ষার্থী দিলশাদ দোদুল। জয়ের পর তার চোখে ঝড়ছিল আনন্দাশ্রু। তিনি বাংলানিউজকে তার অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘শেষ দু’ঘণ্টা ধরে আমি খেলা দেখছি কিন্তু একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি তখন বিজয়ের জন্য প্রার্থনা করছিলাম। ’
এরকম আরো আনন্দ-উল্লাসের দুরন্ত বর্ষণে বার বার সিক্ত হতে চায় বাংলার সব মানুষ। এই প্রার্থনা আজ ঘরে ঘরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের শোচনীয় হার বিশ্বকাপ ক্রিকেট ঘিরে উৎসবÑ আনন্দেকে ফিকে করে দিয়েছিল। আজকের বিজয়ে রং ফিরে পেল স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ উৎসব। এ বিজয় ক্রিকেট উৎসবের মরা গাঙে এনে দিলো ভাদ্রের যৌবন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১১