ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

ব্যর্থতায় কোচকে দুষলেন আসিফ

সেকান্দার আলী, গুয়াংজু থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১০
ব্যর্থতায় কোচকে দুষলেন আসিফ

গুয়াংজু: রাইফেল থেকে নলটাকে আলাদা করা হলো। এরপর ভারি পোশাকগুলো গুছিয়ে নিলেন আসিফ হোসেন খান।

এশিয়ান গেমসের অভিযান একবেলাতেই চুকিয়ে দিয়েছেন। সুখবর দেওয়ার মতো কিছু করেননি। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৪৮ জনের মধ্যে ২২তম হয়েছেন। সান্ত্বনা এটুকুই ২৬ জনকে পেছনে ফেলেছেন।

অথচ আসিফকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন কর্মকর্তারা। স্বপ্ন দেখাতে পছন্দ করেন আসিফ। ২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমেসে সোনা জয়ী শ্যুটার এশিয়ান গেমসে শনিবার স্কোর তুলেছেন ৫৮৫। বেশি দিন আগের কথা নয়। ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে ক্যারিয়ার সেরা ৫৯৬ স্কোর তুলেছেন। সর্বশেষ দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসেও ৫৮৬ ছিলো আসিফের স্কোর। গুয়াংজুতে এসেই ফর্মটা নিচে নেমেছে।

এসবে বিকার নেই জাতীয় দলের এই শ্যুটারের। বরাবরের মতো অন্যের ওপরে দায় চাপাতে চেষ্টা করলেন। অভিযোগের তীর ছুড়লেন কোচ ইনকন হাওয়াংয়ের দিকে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসা কোচকে অযোগ্য বলতেও তার মুখে বাঁধেনি। তার ভাষায়,“তিনি আমাদের কি শেখাবেন। কিছুই জানেন বলে মনে হয় না। আমাকে মেয়েরা পেছন থেকে নির্দেশনা দিয়েছে। অথচ কোচ কাঠের পুতুলের মতো বসে দেখছিলেন। ”

২০০২ সালে কমনওয়েথ গেমস এবং ২০০৪ সালে সাফ গেমসে সোনা জয়ের পর আসিফকে খুব একটা ধারাবাহিক দেখা যায়নি। মাঝে তো জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি। জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টেও নিষ্প্রাণ সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু এই আসিফের পেছনে বাংলাদেশ শ্যুটিং ফেডারেশন সবচেয়ে বেশি সময় এবং অর্থ খরচ করেছে। জার্মানিতে দু’বার এবং চিনের গুয়াংজুতে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবুও বলছেন তাকে নির্দেশনা দেওয়ার মতো ভালো অভিভাবক নেই।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফল বেশ কয়েকজন শ্যুটার এখন জাতীয় দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আতিক রহমান আর্মার হিসেবে দলের সঙ্গে গুয়াংজুতে এসেছেন। তার মতে,“একজন শ্যুটারকে নির্দেশনা দেওয়া যায়। এর বেশি কিছু নয়। শ্যুটার নিজের চেষ্টায় এগিয়ে যেতে পারে। সাফল্যের জন্য অনুশীলন অতিগুরুত্বপূর্ণ। আসিফের এই জায়গাতে মন নেই। অনেক বোঝানোর পরেও তার মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। ”

আসিফকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন,“ব্যর্থতার দায় অবশ্যই আমার। অনুশীলন কেন মনযোগ দিতে পারছি না। কেন ধারাবাহিক হতে পারছি না। সেবিষয়ে খতিয়ে দেখার কেউ নেই। ”

মজার বিষয় হলো শ্যুটিং শেষে আসিফ নিজেই স্বীকার করেন,“আগের মতো ফিটনেস নেই। শ্যুটিংয়ে মন বসাতে পারি না। ” কিন্তু এশিয়ান গেমসে দল নির্বাচনের আগে এনিয়ে মুখ খোলেননি!

এই আসিফকে নিয়েই ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক গেমসে সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন দেখছেন আসিফও। উদাহরণ সহকারে বোঝাতে চাইলেন,“দেড় বছরের অনুশীলনে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছি। অলিম্পিকের এখনো দুই বছর বাকি। দেখাযাক কি হয়। ”
 
গুয়াংজু সময়: ১৭৩০ ঘন্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।