ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

জার্মানির গোল উৎসব, আর্জেন্টিনার বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১০

কেপটাউন: ব্রাজিলের যা হয়েছে আর্জেন্টিনারও তাই। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়।

মেসি-ম্যারাডোনার ভাগ্যে জুটেছে ৪-০ গোলের পরাজয়। জার্মানির ঠিকানা সেমিফাইনালে।

মিরোস্লাভ কোসা দু’টি, থমাস মুলার ও আর্নে ফ্রেডরিখ একটি করে গোল করেন।

ঈশ্বরে ভরসা রেখেছিলেন ম্যারাডোনা। ঐশ্বরিক ইচ্ছেতেই জিততে চেয়েছিলেন কোয়ার্টার ফাইনাল। তখন হয়তো একবারও ভাবেননি জার্মানির সেই ‘বলবয়’ থমাস মুলার কাঁপিয়ে দেবে আর্জেন্টিনার গোলবার। অবজ্ঞার জবাব দিতে প্রস্তুত হয়ে আছেন। খেলার তৃতীয় মিনিটেই নিশানায় বল পাঠান মুলার।

গোলের যোগানদাতা বাস্টিয়ান শোয়ানস্টাইগার। বাম প্রান্ত থেকে বাক নেওয়া ফ্রি কিক বলে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মুলার। আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বরকে নিজের জাত চেনান জার্মান তরুণ।

মুলার এখন সোনার বুটের অন্যতম দাবিদার। সতীর্থ মিরোস্লাভ কোসা, আর্জেন্টিনার গঞ্জালো হিগুয়েন, স্লোভাকিয়ার রবার্ট ভিতেক, স্পেনের ডেভিড ভিয়া ও নেদারল্যান্ডসের ওয়েসলি স্নাইডারের সঙ্গে চার গোল নিয়ে পাল্লা দিচ্ছেন।

শুরুটা দারুণ ছিলো তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের। গোল পেয়ে বেশ উজ্জীবিত। পালা করে আক্রমণ দিয়ে বেশ কয়েকবার বিপদের মুখে ঠেলে দেয় আর্জেন্টিনাকে।

তখনো হতাশ হয়নি ম্যারাডোনার দল। মেসি-তেভেসরা মিলে চেষ্টা করেন ঘুরে দাঁড়াতে। নবম মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণ ছিলো। কিন্তু জার্মান রক্ষণ শিবির প্রস্তুত থাকায় গোলের সুযোগ তৈরি হয়নি।

প্রথমার্ধের প্রায় ২০ মিনিট গুছিয়ে উঠতে পারেনি দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। এ সুযোগে জেঁকে বসে পাওয়ার ফুটবলের প্রবক্তা জার্মানি। খেলার ১৩ মিনিটে ১৮ গজ দূর থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন লুকাস পোডলস্কি। দিক ভ্রান্ত হয়ে বল চলে যায় সীমানার বাইরে।  

বিরতির আগ পর্যন্ত আধিপত্য ধরে রাখে কোসারা। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে মেসিরা। ৩৩ মিনিটে গোলে কিক নিয়েছিলেন গঞ্জালো হিগুয়েন। কিন্তু গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ার সহজেই বলের নিয়ন্ত্রণ নেন।  

খানিক বাদেই আর্জেন্টিনার আফসোস। ৩৭ মিনিটে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছিলেন তেভেস। কিন্তু অফসাইডের দায়ে গোল বাতিল করা হয়। তেভেস একা নন, তিনজনকে অফসাইডের ফাঁদে ফেলেন জার্মান ডিফেন্ডাররা।

পাল্টা অভিযানে বক্সের ওপর থেকে লুকাস পোডলস্কির বাঁ পায়ের জোরালো শট অল্পের জন্য জালে পৌঁছায়নি। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সার্গিও রোমেরোর কল্যাণে বিরতির আগে আর কোন গোল হজম করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে।

পরের অর্ধে চাপিয়ে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ঝটিকা আক্রমণ দিয়ে চেপে ধরে জার্মানদের। কিন্তু দিনটি যে মেসিদের নয়, বোঝার বাকি থাকে না। দ্বিতীয়ার্ধের ১৮ মিনিটে উল্টো গোল করে বসে জার্মানি। ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কোসা। লুকাস পোডলস্কির পাস থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলে ম্যারাডোনার দল। ৭৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে আরো একবার। এবারের গোল দাতা আর্নে ফ্রেডরিখ। শোয়ানস্টাইগারের পাস থেকে বল জালে পাঠান আক্রমণভাগের এই খেলোয়াড়।

৩-০ গোলে এগিয়ে থেকেও মন ভরছিলো না জার্মানদের। নিজের শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে কোসার গোলুধা একটু বেশি ছিলো। ৮৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন তিনি। ৪-০’তে এগিয়ে যায় জার্মানি।

এমন রাজসিক উদযাপন খুব কম ফুটবলারের ভাগ্যেই জোটে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জোড়া গোল। স্বদেশী কিংবদন্তি গার্ড মুলারের ১৪ গোল ছুঁয়ে ফেলা। বিশ্বকাপে সর্বাধিক গোলের রেকর্ড থেকে মাত্র একটি গোল পেছনে থাকা। সর্বপরি দলের জয় কোসার জন্য কেপটাউনের গ্রিন পয়েন্ট সাফল্যের ডালি সাজিয়ে রেখেছিলো।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘন্টা, জুলাই ০৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।