ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

ড্র করতে পারতাম: মুশফিক

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১২
ড্র করতে পারতাম: মুশফিক

ঢাকা: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধারণাতেও ছিলো না তারা এতটা ভালো খেলবেন। খেলা শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিম একদিন এনিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছিলেন।

কিন্তু খেলা শুরুর পর ভোজবাজির মতো বদলে গেছে সব। টি-টোয়েন্টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে শেষপর্যন্ত লড়াই করেছে। খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ অধিনায়ক তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন।

প্রশ্ন: ম্যাচটা কি হাত থেকে ছুটে গেছে?

মশফিক: শেষ দুটো সেশন বাদে পুরো টেস্টে আমরা খুব ভালো খেলেছি। প্রতিটা সেশনেই আমরা ধারাবাহিকভাবে ছিলাম। কিন্তু আজ লাঞ্চের পর ম্যাচটা আমাদের কাছ থেকে চলে গেছে। ওই সেশনেই ৫-৬ উইকেট পড়ে। ২৫০ রান চেজ করতে, এমন হলে কাজটা খুব কঠিন হয়ে যায়। ওই সেশনে যদি আমরা একটা বা দুটো উইকেট হারাতাম, তাহলে হয়ত শেষ সেশনে আমাদের হাতে বেশ কিছু উইকেট থাকতো এবং তখন হয়তো ১২০-১৩০ রান লাগত। আমরা তখন জেতার জন্য অলআউট খেলতে পারতাম।

প্রশ্ন: শুরুতে জয় না ড্রয়ের কথা ভেবেছিলেন?

মুশফিক: ড্র তো অবশ্যই। শেষদিনে ২৪৫ চেজ করা খুব সহজ কাজ ছিলো না। আমরা জানতাম তারাও আমাদের ওপর চেপে বসতে চাইবে। ২৪৫ যথেষ্ট হবে না, এটা তারাও মনে করেছিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল লাঞ্চের আগের সময়টা ও পরের সেশনে আমরা খুব অলআউট খেলবো না, স্বাভাবিক খেলাই খেলব। ওই সময়ে যদি একটা  জুটি হতো, তাহলে শেষ সেশনে গিয়ে সর্বনি¤œ ১২০ বা সর্বোচ্চ ১৫০ রান দরকার হলেও চেজ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা মাঝের সেশনে অনেক উইকেট হারিছি। ফলে আমাদের ওপর চাপ পড়ে। আর চতুর্থ ইনিংসে এরকম টার্গেটে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা আমাদের খুবই কম। যত বেশি খেলবো, এরকম পরিস্থিতিতে তত বেশি উন্নতি করতে পারব।

প্রশ্ন: ২৪৫ রানের টার্গেট চেজ করতে নেমে উত্তেজনা বা রোমাঞ্চ কাজ করেছে কি?

মুশফিক: কাল আমাদের মনে হয়েছিল তারা ৩০০ রানের কমে ছাড়বে না। কিন্তু আমাদের বোলাররা অসাধারণ বোলিং করায় ২৪৫ রানের টার্গেট পাই। অনেক সময় যেটা খুব ‘ট্রিকি’ একটা স্কোর। এমন স্কোর তাড়া করতে গিয়ে অনেক দল হেরে যায়। আমাদের চিন্তা ছিলো লাঞ্চের আগেও পরের সেশনে স্বাভাবিক খেলাটা খেলে যাওয়ার। উইকেট হাতে থাকলে শেষ সেশনে গিয়ে চেজ করার চিন্তা করবো। এরকম বার্তা সবার কাছেই দেওয়া ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য উইকেট বেশি পড়ে যাওয়াতে আমাদের ওপর চাপ চলে আসে।

প্রশ্ন: কতটা হতাশ?

মুশফিক: যে বোলিং অ্যাটাকের বিপক্ষে আমরা ৫৫৬ রান করলাম, সেই অ্যাটাকের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং হতাশারই। জিততে না পারি ড্র তো করতে পারতাম। সেজন্যই বলছিলাম আমাদের সমন্বয়টা ভালো হওয়া দরকার। আমরা যেন উইকেট না দিয়ে আসি। আমাদের উইকেট নিতে বোলারদের যেন অনেক কষ্ট করতে হয়। প্রতিপক্ষের উইকেট নিতে আমাদের যেমন অনেক কষ্ট করতে হয়, ঠিক তেমন।  

প্রশ্ন: এমন পারফরম্যান্স অপ্রত্যাশিত কিনা?

মুশফিক: টেস্টের আগে প্রেস কনফারেন্সেও বিষয়টা এসেছিল। তাদের সঙ্গে আমরা পাঁচদিন খেলতে পারব কিনা বা লড়াই করতে পারব কিনা। আমরা দুদিন ভালো খেলে তিনদিন খারাপ খেলবো কি না। কিন্তু খুব ভালো একটা টেস্ট ম্যাচ খেললাম আমরা। পাঁচশ’র বেশি রান বা তাদের প্রথম ইনিংস টপকে যাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। নাঈম ভাইয়ের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। তামিম, সাকিব, নাসির ও রিয়াদ ভাই, তারা যখনই সুযোগ পেয়েছেন অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। এমন অনেক কিছুই এ টেস্টে হয়েছে যেগুলো নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। আরেকটু ভালো খেললে হয়ত জিততেও পারতাম।

প্রশ্ন: সোহাগ গাজীর বোলিং কেমন লেগেছে?

মুশফিক: সে খুব অসাধারণ বোলিং করেছে। কৃতিত্ব অবশ্যই দিতে হবে। তাকে নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল তাদের টপ সিক্সে ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই বাঁহাতি। এজন্য তার কাছে প্রত্যাশাও বেশি ছিলো। আমরা তাকে কেবল এ বার্তাই দিয়েছিলাম যে তুমি উইকেট পাও বা না পাও ইকোনমি রেট যেন ঠিক থাকে। সুযোগ তৈরি করতে হবে। দায়িত্ব এটুকুই। ফল কী হবে তা নিয়ে চিন্তা কোরো না। তুমি যেন ভালো বল করো, এটাই আসল। সৌভাগ্য যে, আল্লাহর রহমতে সে অনেক ভালো বল করেছে। এবং যে কয়টা উইকেট পেয়েছে, বেশিরভাগই ভালো ভালো উইকেট।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১২
এসএ
    

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।