ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

ডাচদের উচ্ছ্বাসে ব্রাজিলের করুণ বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১০
ডাচদের উচ্ছ্বাসে ব্রাজিলের করুণ বিদায়

পোর্ট এলিজাবেথ:  বিদায় ব্রাজিলের, বিশ্বকাপ থেকে বিদায়। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের হেক্সা জয়ের অভিযান থেমে গেলো, কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের কাছে ২-১ গোলে হারায়।

প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো অজেয় নেদারল্যান্ডস।
 
এগিয়ে থেকেও শেষপর্যন্ত পরাজয় মেনে নিতে হয় সাম্বাদের। খেলার ১০ মিনিটে দারুণ এক গোল করে সমর্থকদের আনন্দে ভাসান রবিনহো। বিরতি পর্যন্ত গোল ধরে রাখতেও সমর্থ হয় লাতিনরা।

দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় দৃশ্যপট। কাল হয় আত্মঘাতি গোল। ৫৩ মিনিটে ওয়েসলি স্নেইডারের শট সরাসরি মেলোর মাথায় লেগে জালে ঢোকে। অপ্রত্যাশিত গোলে ১-১ এ সমতা আনে কমলা বাহিনী।

উদ্যম ফিরে পায় আরিয়ান রোবেনরা। জয়ের জন্য দ্বিতীয় গোল তুলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ৬৮ মিনিটে মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগান ওয়েসলি স্নেইডার।

ম্যাচে ফেরার জন্য তখনো যথেষ্ট সময় হাতে ছিলো। ব্রাজিল বেশ কিছু সুযোগও তৈরি করে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি।

সমতায় ফেরা দূরের কথা ৭৩ মিনিটে ঘটে বিপত্তি। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিলের ফেলিপ মেলো। দলকে ডোবাতে এরচেয়ে বড় ক্ষতি আর কিছুই হতে পারে না।

২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ঠান্ডা মাথায় সুযোগ খোঁজার কথা। হয়ে যায় উল্টো। আরিয়ান রোবেনকে অবৈধভাবে বাঁধা দিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মেলো।

১০ জনের দল নিয়েও সমতায় ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করে লুসিও বাহিনী। সম্ভাবনা জাগিয়ে হতাশ করে প্রতিপক্ষের গোলবারের সামনে পৌঁছানোর পর। লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে বল পাঠায় ভুল ঠিকানায়।

৭৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে তৃতীয় গোল হজম করার অবস্থা তৈরি হয়েছিলো। ভাগ্যিস প্রস্তুত ছিলেন হুলিও সিজার।

মিনিট ঘুরতে না ঘুরতেই মাইকনের কর্নার কিক থেকে গোলে শট নেন লুসিও। কিন্তু ডাচ বাহিনী কর্নারের বিনিময়ে বিপদ মুক্ত করে।

৮৮ মিনিটে দানি আলভেজের ডান পায়ের জোরালো শট প্রতিহত করেন ডাচ গোলরক্ষক স্টেকলেনবার্গ। দেখতে দেখতে ফুরিয়ে আসে সময়। শেষ মুহূর্তের টানটান উত্তেজনা। এই বুঝি ম্যাচে ফেরে ব্রাজিল। কোথায় কি! কোটি কোটি ভক্তের হৃদয় ভেঙ্গে দিয়ে পরাজয় মেনে নেয় দুঙ্গা বাহিনী। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়রা। নত হয়ে মাঠ ছাড়ে কাকা, রবিনহোরা।

অথচ খেলার শুরুতে দারুণ চনমনে ছিলো ব্রাজিলের ফুটবলাররা। পরিকল্পিত আক্রমণ। ছন্দময় লাতিন ফুটবল দিয়ে ডাচদের ‘ব্রাজিলিয় পাকে’ ফেলে দিয়েছিলেন গিলবার্তোরা। ভোজবাজির মতো বদলে যাবে ম্যাচের পরিস্থিতি খোদ ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাও হয়তো বুঝতে পারেননি। তা না হলে এমনটি হওয়ার নয়।  
 
অনেক বছর পর দুঃখ ঘোচাতে পেরেছে টিউলিপ বাহিনী। ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এবং ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এই ব্রাজিলের কাছেই হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করতে হয়েছিলো ডাচদের। প্রতিশোধের আগুনে ফুটছিলো কমলা বাহিনী। হীরক খনির দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতেই সেই সোনলী সময়ের দেখা পেলো টোটাল ফুটবলের জনকরা। নিয়ে নিলো মধুর প্রতিশোধ।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘন্টা, জুলাই ০২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।