ঢাকা: দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ যেন লাতিন ফুটবলেরই প্রদর্শনী। ইউরোপের সঙ্গে সমান তালেই পাল্লা দিচ্ছে তারা।
বিশ্বকাপে এতদিন লাতিন আমেরিকা মানেই ছিল শুধু ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। কিন্তু এবার সেই খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে তারা। আলো ছড়িয়েছে উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও চিলির মতো দেশগুলো।
গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে আট গ্রুপের মধ্যে থেকে চারটিতেই লাতিনরা শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ১৬’তে উঠে আসে। গ্রুপ এ থেকে উরুগুয়ে, বি গ্রুপ থেকে আর্জেন্টিনা, গ্রুপ এফ থেকে প্যারাগুয়ে এবং জি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। এছাড়া এইচ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে দ্বিতীয় পর্বে যায় চিলি।
একমাত্র চিলি ছাড়া নক আউট পর্বে জিতে সবাই উঠে আসে শীর্ষ আটে উঠে আসে। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ে খেলবে ঘানার বিপক্ষে এবং হল্যান্ড খেলবে ব্রাজিলের বিপক্ষে। উভয় ম্যাচের বিজয়ীরা মুখোমুখি হবে সেমিফাইনালে।
অন্যদিকে জার্মানি খেলবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ও প্যারাগুয়ে মুখোমুখি হবে স্পেনের। দুই ম্যাচের বিজয়ীরা খেলবে সেমিফাইনালে। সূতরাং একটি অল লাতিন সেমিফাইনাল বা ফাইনাল হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
দক্ষিণ আমেরিকাকে প্রথম এবং দ্বিতীয়বার (১৯৩০ ও ’৫০)বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছে উরুগুয়ে । এরপরই দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যায় তারা। উদয় হন নতুন শক্তি ব্রাজিলের। ’৫৮, ৬২ ও ৭০ শিরোপা জেতে সেলেকাওরা। তাদের হাত ধরে তখনকার বিশ্বকাপ জুলি রিমে ট্রফি চিরদিনের জন্যই থেকে যায় লাতিনদের হাতে।
১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত হয় ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফির। জার্মানি প্রথমবার জয় করে সেই ট্রফি। তবে পরের বারই লাতিন অঞ্চল থেকে পাদ-প্রদীপের আলোয় উঠে আসে আরো একটি দেশ আর্জেন্টিনা।
১৯৭০ জুলি রিমে ট্রফি পর পরবর্তী দুই দশকের জন্য ব্রাজিল যখন দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যায় লাতিন গৌরবকে ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। ’৭৮ ও ৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয় করে। ’৯৪ সালে শিরোপা জেতে ব্রাজিল তার হৃত গৌরব ফিরে পায়। ২০০২ সালে জেতে পঞ্চমবা শিরোপা।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ছায়া থেকে বেড়িয়ে এবার দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলকে আরো উঁচুতে নিয়ে গেছে প্যারাগুয়ে, চিলি ও উরুগুয়ের মতো দেশগুলো।
দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে তারকাখ্যাতিতেও ইউরোপীয়দের পেছনে ফেলেছে লাতিনরা। আর্জেন্টিনার মেসি বা ব্রাজিলের কাকা ও রবিনহোর খ্যাতিতে ম্লান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, ওয়েনে রুনি, আরিয়ান রোবেনরা। অবশ্য তারকা খ্যাতিতে বরাবরই এগিয়ে লাতিনরা। পেলে বা ম্যারাডোনার সমতুল্য কোনো তারকা দিতে পারবে কি ইউরোপ?
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘন্টা, ০১ জুলাই, ২০১০