নরসিংদী: নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীমের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করে শহর বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর হোসাইনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল।
নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ফারুক উদ্দিন ভূইয়া স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয় যে, গত ৪ অক্টোবর, শনিবার শহরের আরশিনগর সিএনজি ট্যাম্পু স্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীমের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। আপনি সিএনজি স্ট্যান্ডের ইজারাদার ও সিএনজি শ্রমিক সমিতির সভাপতি পাশাপাশি আপনি নরসিংদী শহর বিএনপির সহসভাপতি। এ হামলার ঘটনায় বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা শহর বিএনপির পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনি শহর বিএনপির সহসভাপতি হিসেবে এ দায় এড়াতে পারেন না। অতএব বিএনপিকে দায়মুক্ত করা এবং সার্বিকভাবে দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আপনাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য আহ্বান করা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে একতরফাভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল বলেন, আমার জানামতে আলমগীর হোসেন নরসিংদী পৌর শহরের একজন ইজারাদার হিসেবেই টাকা তোলেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ ন্যাক্কারজনক। হামলার ঘটনা কেন্দ্র করে বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে দলের পক্ষে এরই মধ্যে লিখিতভাবে আলমগীর হোসেনের কাছে জবাব (কারণ দর্শানো নোটিশ) চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ও সিনিয়র নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্ত অনুসারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নরসিংদীর অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিয়মিত টহল দিচ্ছিলো। এ সময় তারা খবর পান পৌর শহরের আরশিনগর এলাকায় ভয়ভীতি দেখিয়ে যানবাহন থেকে চাঁদা তুলছে। এ সময় তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শক্তির মহড়া দিয়ে অটোরিকশা ও বিভাটেক থেকে চাঁদা তুলতে দেখেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গেলে শহর বিএনপির সহসভাপতি আলমগীরের নির্দেশে একদল লোক পুলিশের কাজে বাধা দেয় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর আক্রমণ করে।
এ ঘটনায় শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে নরসিংদী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়। নরসিংদী মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। তবে ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি বিএনপি নেতা আলমগীরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
জেএইচ