ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে, চাচাতো ভাইকে চোর সাব্যস্ত করে পিটিয়ে হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪৯, অক্টোবর ৫, ২০২৫
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে, চাচাতো ভাইকে চোর সাব্যস্ত করে পিটিয়ে হত্যা

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে মো. কালাম খান (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে চোর সাব্যস্ত করে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়িখালী ইউনিয়নের ছোট জামুয়া এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত কালাম খান চিংড়াখালী ইউনিয়নের ঢেপুয়ার পাড় গ্রামের ওয়াজেদ আলী খান ওরফে কালু খানের ছেলে।

এদিকে, হত্যার ঘটনায় রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সাবেক যুবলীগ নেতা সোহেল খান, উপজেলা জামায়েতের সেক্রেটারি মাওলানা মাকসুদ আলী খানসহ ১২জনকে আসামী করে মোড়েলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ছেলে রাব্বি খান।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে কালাম খান ও একই বংশের সোহেল খানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে সোহেল খান তাঁর লোকজন কালাম খান ও তার বড় ভাই লুৎফর খানকে চুরির অভিযোগ দিয়ে ধরে নিয়ে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে কালাম খান অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রাস্তায় এনে ফেলে পুলিশে দেয়। পরে পুলিশ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

গুরুতর অবস্থায় দুই ভাইকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কালাম খানকে মৃত ঘোষনা করেন। তার বড় ভাই লুৎফর খানকে অবস্থায়ও সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেরই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত কালামের ছেলে মো. রাব্বি খান বলেন, সন্ধ্যায় আমার আব্বা ও চাচা ওষুধ আনতে পাশের বাজারে যান। সেখান থেকে সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল খান লোকজন নিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যায়। সোহেল খা‘র নেতৃত্বে মাকছুদু মাওলানা, মনু খাঁ, খবিরসহ ২৫-৩০ জন মিলে আমার বাবা ও চাচাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে মারধর করে ছিনতাই ও চুরির কথা বলে পুলিশে দেয় সোহেল খান ও তাদের লোকজন।

রাব্বি আরও বলেন, ১৫-২০ বিঘা জমির একটা মামলা চলে, সেই জমির বিরোধ ছিল তাদের সাথে। সেই কারণেই তারা আমার বাবারে হত্যা করছে।

চিংড়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নিহতের প্রতিবেশী মামুন খান জানান, তারা একই বংশের লোক। সোহেল খান ও কালাম খানের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে শনিবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সোহেল খান ও তার সহযোগীরা হামলা চালায়। এতে কালাম খান নিহত এবং তার বড় ভাই লুৎফর খান গুরুতর আহত হন। সোহেল খান চিনাখালি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

চিংড়াখালী এলাকার বাসিন্দা সোহেল খানের বিরুদ্ধে এর আগেও মোরেলগঞ্জ থানায় একাধিক চুরি, ছিনতাই, মারধর ও মাদক মামলা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।

সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লোকজন দু'জনকে চোর হিসেবে ধরে মারধর করছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। সেখানে একজন মারা যায়। নিহতের পরিবার মামলা দিয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। এখানে ছাড় দেওয়া হবে না।

 

 

এমআরএম

 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।