খুলনা: খুলনায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলার অভিযোগে সুকান্ত দাশ নামে এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এজন্য দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে মহানগরীর ইস্টার্নগেট এলাকা থেকে সুকান্তকে খানজাহান আলী থানা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাকে আর কোনো থানায় পাওয়া যায়নি। অভিযোগ উঠেছে সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও খুলনা জেলা শাখার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, খুলনায় জুলাই আন্দোলন দমাতে শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা সুকান্তকে কীভাবে ছেড়ে দেওয়া হলো? জুলাইযোদ্ধারা কি তাহলে আইনকে হাতে তুলে নেবেন? নিপীড়ক পুলিশ কর্মকর্তা সুশান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অফিস ঘেরাও করা হবে।
এনসিপি খুলনার প্রধান সংগঠক আহম্মদ হামীম রাহাত বলেন, শুনছি আওয়ামী পুলিশ লীগের অন্যতম নেতা জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্রদের ওপর হামলাকারী স্বৈরশাসকের দালাল সাবেক সোনাডাঙ্গা থানা ও পরে খুলনা থানার এসআই সুকান্তকে খানজাহান আলী থানা পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে কেএমপি ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
সুকান্ত গ্রেপ্তারের পর খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন জানান, এসআই সুকান্ত ওখান থেকে থ্রি হুইলার পরিবহনে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
খুলনা নগর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৈমুর ইসলাম জানান, এসআই সুকান্ত বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানা ও সদর থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মনার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে একটি ও আরেকটি জিআর মামলা রয়েছে। এছাড়া আদালতে তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
পরে রাতে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, তাকে দৌলতপুর থানায় পাঠানো হয়েছে। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাহার হোসেন জানান, তার থানায় এসআই সুকান্তকে আনা হয়নি। পরে আবার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে সেখানেও এসআই সুকান্তকে পাওয়া যায়নি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম জানান, তার থানাতেও নেই সুকান্ত।
কেএমপির সহকারী উপ-কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) খন্দকার হোসেন আহম্মেদ জানান, এসআই সুকান্তের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তবে সে এখন কোথায় আছে বা কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তা জানা নেই।
এসআই সুকান্ত নগরীর কোনো থানায় নেই জানাজানি হওয়ার পর ক্ষুব্ধ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে কেএমপি ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমআরএম/এইচএ/