ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৩ জুন ২০২৫, ০৬ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃ্ষ্টিপাত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১৮, জুন ১, ২০২৫
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃ্ষ্টিপাত

সিলেট: টানা ভারী বর্ষণে এবার রেকর্ড বৃষ্টি হলো সিলেটে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনিবার (৩১মে) সকাল ৬টা থেকে রোববার (১ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৪০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

যা ২০২২ সালের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ৪০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

এরআগে ২০২৩ সালের ৩ জুলাই ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ৩০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২০২২ সালে সিলেটে একদিনে ২৫৬ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড আছে। একই বছরের জুন মাসে (১৮ জুন) ২৪ ঘণ্টায় ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরও আগে ২০০০ সালের ১২ জুন রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয় সিলেটে ৩৬২ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিগত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হলো ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৪৭৬ মিলিমিটার। এর আগে ২০০১ সালে সন্দ্বীপে ২৪ ঘণ্টায় ৫৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। ২০১২ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রামে হয়েছিল ৪৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

এদিকে, ভারতের চেরাপুঞ্জিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল। ফলে এ অঞ্চলের দুই প্রধান নদী সুরমা-কুশিয়ারার পানি দু’টি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এ কারণে সিলেটের নিম্নাঞ্চলের আরও বেশ কিছু অংশ। ডুবে গেছে হাট-বাজার, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। এছাড়া রাতভর ভারি বর্ষণে সিলেট নগর ছিল জলমগ্ন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে,  রোববার (১ জুন) সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৪টি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে সুরমা কানাইঘাটে ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া বিকেল ৩টায় কুশিয়ারার পানি ৩টি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। তন্মধ্যে আমলসিদে দুপুর ১২ টায় ১২৩ সেন্টিমিটার থেকে বেড়ে বিকাল ৩টায় ১৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া বিয়ানীবাজারের শেওলায় ১৭ ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এছাড়া ভারি বর্ষণে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে বাসা-বাড়ি, অফিস, আদালত, হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, রাস্তাঘাট, বাসা-বাড়িতেও জলজট। ভারী বর্ষণে ডুবে যাওয়া সড়কে চলতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়েন মানুষ। অনেক সড়কে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যানবাহন বন্ধ হয়ে পড়তে দেখা গেছে।

শনিবার এমন অবর্ণনীয় পরিস্থিতি সিলেট সিলেট নগরজুড়ে। ড্রেন উপচে ময়লা পানি ওঠেছে সড়কে ও বাসা-বাড়িতে। এসব দুর্গন্ধযুক্ত দুষিত পানি মাড়িয়ে চলতে হয়েছে নিতান্তই প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষজনকে। ভারী বর্ষণের কারণে নগরজুড়ে ছিল যানবাহন সংকট। নগেরীর বাসিন্দারা পানি মাড়িয়ে ভিজে যেতে হয়েছে গন্তব্যে। এমন দুঃসহ নাগরিক ভোগান্তির জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকেই দোষারূপ করছেন নগরবাসী।

এনইউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।