ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, ০৮ মে ২০২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

নতুন বাড়ি করতে সেই গাছ বেচেছিলেন মালিক, বয়স নিয়েও বিভ্রান্তি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২২, মে ৮, ২০২৫
নতুন বাড়ি করতে সেই গাছ বেচেছিলেন মালিক, বয়স নিয়েও বিভ্রান্তি কেটে ফেলা বট গাছ।

মাদারীপুর: মাদারীপুরে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলা বট গাছটির প্রকৃত বয়স নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কেটে ফেলার পর শতবর্ষ পুরাতন বলে স্থানীয়রা প্রচার করলেও গাছটির প্রকৃত বয়স আরও কম বলে জানান গাছের মালিক সাত্তার হাওলাদার।

একই দাবি জেলা বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমেরও। বন কর্মকর্তা জানান, সরেজমিনে দেখা গেছে গাছটির বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের বেশি নয়।

এদিকে গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বটবৃক্ষের মালিককে সঙ্গে নিয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন সংবাদ সম্মেলন করেছে। বুধবার (৭ মে) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, গত ৫ মে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীর কান্দি গ্রামের কুমার নদের খেয়া ঘাটে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় মুসল্লিরা একটি পুরোনো বটবৃক্ষ কর্তন করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বটবৃক্ষ কর্তন বন্ধ করা হয়।  

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির গাছ জমির মালিক নিজ উদ্যোগে বিক্রি ও কর্তন করতে পারেন। শিরখাড়ার বট গাছটি ওই জমির মালিক নতুন বাড়ি করার জন্য পার্শ্ববর্তী শ্রীনদী বাইতুস সুন্নত ক্যাডেট মাদরাসার কাছে জ্বালানি কাঠ হিসেবে বিক্রি করেন। ’

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধান ও শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির হোসেন ও শিরখাড়া ইউনিয়নের ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা  হয়েছে। এ কমিটি আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।  

জানতে চাইলে গাছের মালিক সাত্তার হাওলাদার বলেন, ‘আগে আমাদের বাড়ি ছিল ওখানে। নদীতে ভাঙার পর আমরা অন্যত্র এসে বাড়ি করেছি। এখন নদী আর ভাঙে না ওখানে। ওই জায়গা পরিষ্কার করতে আমি গাছটি বিক্রি করেছি। গাছটি বেশ বড় এবং এর শিকড় অনেক মোটা থাকায় গ্রামের একশ্রেণির মানুষ মনে করেছে এটা এক শত বছরের পুরাতন! কিন্তু গাছটির প্রকৃত বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের বেশি হবে না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামে অনেক সময় ভণ্ড সাধু তৈরি হয়। ওই রকমই লাইলি নামে এক নারী ওই এলাকার বট গাছ নিয়ে গুজব ছড়ায়। সে নাকি স্বপ্নে দেখেছে ওই বট গাছের নিচে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এরপর থেকেই এক শ্রেণির লোক আগরবাতি-মোমবাতি দেওয়া শুরু করে। ’

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল হোসেন, মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, বট গাছের মালিক সাত্তার হাওলাদার প্রমুখ।

আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।