ফরিদপুরের নগরকান্দায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দেওয়ার পর ৮ মাস বয়সী শিশুকে (মেয়ে) ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে গিয়েছেন নিজের মেয়েকে ফিরে পেতে।
নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটিকে ফিরে পেতে ফরিদপুরের এক নম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির মা পপি বেগম। ওই মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেদনসহ নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
জানা যায়, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াশুড় ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পাশের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর মাঝে তাদের মেয়ে তানহার জন্ম হয়। পাঁচ মাস আগে কলহের জেরে তাদের তালাক হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান, তালাকের সময় জোর করে মেয়ে তানহাকে রেখে দেন তার স্বামী। পরে শিশুটিকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাচ্চাডার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার খেতে পারি না। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই।
এদিকে এ সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর থেকে পপি বেগমের স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস আত্মগোপন করে আছেন। তবে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল করলে একজন পুরুষ কলটি রিসিভ করে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
আরএ