ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সালতামামি

অস্থিরতা মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান তারা

ফেরদৌসি হিমু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩
অস্থিরতা মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান তারা

শুরু হতে যাচ্ছে আর একটি ইংরেজি নতুন বছর। বিশ্বব্যাপী তারকা রাজ্যের সাথে বাংলাদেশি তারকাদেরও চলছে নতুনকে বরণ করে নেবার আয়োজন।

তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০১৩ কে আনলাকি থার্টিন বলেই মনে করছেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারা। তাই তারা আনলাকি কাটিয়ে নতুন বছরকে লাকিতে পরিণত করার পরিকল্পনা করছেন। দর্শক শ্রোতাদের জন্য তাদের ভালোবাসার অভাব নেই তবুও এ বছর কোথায় জানি কি একটা কমতি রয়ে গেছে। নতুন বছর নিয়ে তারকাদের পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা জানতেই বাংলানিউজের আজকের এই প্রতিবেদন।

নতুন বছরের শুরুর প্রথম কয়েকদিন সিঙ্গাপুর কাটাবেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। তবে নতুন বছরের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার কাটানোর জন্য আমি সিঙ্গাপুর যাচ্ছি। নতুন বছরে তেমন কোন পরিকল্পনা নেই শুধু দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুস্থতা কামনা করছি। তবে আগামী বছরে আমার প্রযোজিত ভালো ছবি দর্শককে উপহার দিতে চাই। সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা। ’

দেশের পরিস্থিতি খারাপ থাকলেও এ বছরটি চিত্রনায়িকা আঁচলের জন্য একটি লাকি বছর । বললেন, ‘আসছে বছরে দর্শকের জন্য আরও ভালো কিছু উপহার দিতে চাই। দেশের সংকটময় পরিস্থিতি থেকে যেন সাধারণ মানুষ খুব দ্রুত মুক্তি পায়। সাবাইকে আমার শুভেচ্ছা এবং সবার কাছে নতুন বছরে আমার অনুরোধ আমাদের ছবিগুলো যেন দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে দেখেন। ’

চিত্রনায়ক বাপ্পি প্রথমেই সবাইকে হ্যাপি নিউ ইয়ার জানিয়ে বলেন, ‘ নতুন বছরে সবাইকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা। আমিও সবার কাছ থেকে দোয়া প্রার্থী যেন নতুন বছরে এবছরের চেয়ে ভালো কাজ উপহার দিতে পারি। আর প্রত্যাশা করছি যত দ্রুত সম্ভব দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং দেশের মানুষও স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করতে পারবে। ’

‘ভক্তদের জন্য আমি এখন সাইমন। তাই নতুন বছরে সবার আগে আমি আমার ভক্ত এবং দর্শককে ভালোবাসা সহ শুভেচ্ছা দিতে চাই। রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে দেশের সবাই শান্তিতে থাকতে পারবে এবং সিনেমা দেখতে পারবে। নতুন বছরে যেন এই অস্থির পরিস্থিতি থেকে সবাই মুক্তি পায় এই কামনা করছি। ’ বললেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক।

চলচ্চিত্র পরিচালক জাকির হোসেন রাজু বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভালো হলে এবং পরিবেশগত দিক থেকে নিশ্চিত হলে ২০১৪ সালে চলচ্চিত্রাঙ্গনে দ্বিগুন এবং ত্রিগুন সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা দর্শককে নতুন বছরে সেই সম্ভাবনার কাছে নিয়ে যেতে চাই। ’

চলচ্চিত্র পরিচালক বদিউল আলম খোকন নতুন বছরকে ঢালিউডের স্বর্ণযুগ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মানুষকে ভালো ছবি উপহার দেওয়ার। ’

পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ২০১৪ সালে একটি হানাহানি মুক্ত বাংলাদেশ চান। বললেন, ‘ বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ, মত বিনিময় এবং সেই মত নিয়ে তর্কবিতর্ক করবে কিন্তু কেউ কারো উপর বল প্রয়োগ করবে না; শুভেচ্ছা হিসেবে এই প্রত্যাশা শোবিজের দর্শকের জন্য। আর নতুন বছরে সরকারি নীতিমালার ভিত্তিতে ছবির প্রযোজকরা যেন সিনেমা হলে টিকিটের নূন্যতম ৫০% টাকা পায়। ’

নির্মাতা অনিমেষ আইচ এক কথায় উত্তর দিলেন, ‘ নতুন বছরে যেন দুই নেত্রীর ঝগড়ার অবসান হয়। সবাই যেন আনন্দে কাজ করতে পারে। সবার জীবন সুন্দর হোক এই কামনায় নতুন বছরে সবার জন্য রইল আমার নতুন শুভেচ্ছা। ’

নতুন বছরে সবার জীবনের নিরাপত্তা কামনা করে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বললেন, ‘সামনের বছর আসছে মানে এক বছর চলে গেল। চলে যাওয়া বছরে রাজনৈতিক সমস্যার জন্য দর্শককে ভালো কিছু দিতে পারিনি। ২০১৩ সালে আনলাকি থার্টিনের মত হয়েছে বছরটি। আসছে বছরে যেন সংকট কাটিয়ে আমাদের দর্শককে ভালো কিছু দিতে পারি। সবার সুস্থতা এবং সুন্দর জীবন কামনা করছি। নতুনের স্বাগতমে সবাইকে জানাচ্ছি হ্যাপি নিউ নিয়ারের হ্যাপি শুভেচ্ছা। ’

‘সবার আগে দরকার রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান। দেশে সাধারণ মানুষ এই বছরটা খুব খারাপ কাটিয়েছে। সবাই যেন নতুন বছরে এই সংকট থেকে মুক্তি পায় আর ২০১৪ সালে যেন সবাই স্বাধীনতার লক্ষ্য নিয়ে সবাই আবার জীবন শুরু করে এই প্রত্যাশায় নতুন বছরের শুভেচ্ছা সবাইকে। ’ নতুন বছরে দর্শককে এভাবেই শুভেচ্ছা জানালেন অভিনেতা হাসান মাসুদ।

নতুন বছরে দর্শকের মনের চাহিদা পূরণ করে কাজ করতে চান অভিনেতা মোশাররফ করিম। বলেন, ‘দর্শকের জন্য আমার সব ভালোবাসা এবং কাজ। আমার কাজের মধ্যে দিয়ে দর্শককে যতটুকু ভালো রাখা যায় তার জন্য সততার সাথে কাজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। সব কিছুর পরেও সবাই ভালো থাকবে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করবে এই কামনায় সবাইকে নতুন বছরে অন্যরকম শুভেচ্ছা। ’

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী নতুন বছরে চারটি পর্যায়ে দেখতে চান বাংলাদেশকে। প্রথমত রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাপ্তি, দ্বিতীয়ত নাটকের মান বাড়ানো, তৃতীয়ত দর্শককে ভারতীয় নয় বাংলাদেশের নাটকে আকৃষ্ট করা এবং চতুর্থত বাংলাদেশের মানুষ যেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পায়। অবশেষে সবাইকে শুভেচ্ছা দিতেও ভোলেননি চঞ্চল চৌধুরী।

অভিনেত্রী তিশা বললেন, ‘দেশ যদি ভালো থাকে সবাই ভালো থাকবে। আর দেশটাকে ভালো করার জন্য সবার যা যা করা প্রয়োজন একসঙ্গে উদ্যোগ নিয়ে সুস্থ সুন্দর ও নিরাপদ জীবনে ফিরে আসতে তাই করবে সবাই এই প্রত্যাশায় সবার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা রইল। ’

অভিনেতা সিদ্দিক বলেন, ‘ঘরের চাল যত ভালোই হোক চালে ফুটো থাকলে ঘরে পানি পরবেই। শোবিজ অঙ্গন ডিজিটালাইষ্ট হলেও নাটক সিনেমার মান বাড়িয়ে দর্শককে ধরে রাখতে হবে। পুরনো বছরের দুঃখ ভুলে গিয়ে নতুনকে স্বাগত জানিয়ে মানুষ যেন ভালো থাকে। শুভেচ্ছা সবাইকে। ’

আগামীতে যেন চলচ্চিত্র অঙ্গন আরও এগিয়ে যায় এই প্রত্যাশা চলচ্চিত্র অভিনেতা নিরবের। বললেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো হলে চলচ্চিত্র অঙ্গনেও ভালো প্রভাব পরবে। তাই নতুন বছরে যেন সবার মাথা ঠান্ডা থাকে এবং  ভালো সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। সাধারণ মানুষ যেন হলে গিয়ে সিনেমা দেখে এই প্রত্যাশাই সবার জন্য নতুন ভালোবাসা রইল।

সবকিছু একটু গড়বর হওয়ায় এ বছরটা একেবারেই ভালো যায় নি অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মীমের। বলেন, ‘এ বছর ভালো যায় নি তাই নতুন বছরটা বেশি ভালো করে কাটাতে চাই। পুরনো বছরের সব দুঃখ ভুলে গিয়ে সবাই একসাথে কাজ করতে হবে। তাহলেই সবার ২০১৪ সালের দিনগুলো ভালো কাটাবে বলে আমি আশা করছি। নতুন বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন সবার সুন্দর কাটে এই প্রত্যাশায় সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। ’

নতুন বছরে ভালো কিছু যেন হয় এই প্রত্যাশা করছেন অভিনেত্রী মেহজাবিন। বললেন, ‘ এ বছরটা ভালো খারাপের মধ্যে দিয়ে কেটেছে আগামী বছরটা যেন ভালো যায় সবার। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন শিথিল হয়। আর সবার প্রতি  আমার অনুরোধ কেউ যেন কাউকে কষ্ট না দেয়। সবাইকে আমার হৃদয় থেকে ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা রইল। `

অভিনেত্রী ভাবনার পরিকল্পনা জানালেন এভাবে, ‘নতুন বছরে আমি চেষ্টা করব দর্শককে ভালো স্ক্রীপ্টের ছবি উপহার দিতে। আর আগামীর জন্য সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ সবাই সবার মত করে যেন নিরাপদে থাকে। মানুষ যেন হানাহানি না করে নিজের জীবনকে ভালোবেসে সামনে এগুতে থাকে এই প্রত্যাশায় সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ’

অভিনেত্রী ইশানা বললেন একটু ভিন্ন কথা। তার মতে, ‘মানুষের জীবনের প্রতিটা মুহুর্তই মূল্যবান। পিছনের সংকট ভুলে গিয়ে সামনে আসা প্রতিটা ক্ষণের জন্য ভালো কিছু করার চিন্তা করতে হবে। নতুন বছরে শুধু বছরের প্রথমদিন নয় বছরের প্রতিটা দিনই যেন প্রতিটা মানুষের জন্য হ্যাপি নিউ ইয়ার হয় এই কামনা এবং শুভেচ্ছা রইল সবার জন্য। ’

আসছে বছরে দেশের শান্তি কামনা করে সঙ্গীতশিল্পী সালমা বলেন, ‘দেশের শান্তি না থাকলে মানুষের মনেও শান্তি থাকবে না । রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য যা আমরা এই বছর শ্রোতাকে দিতে পারিনি আগামীতে যেন তার থেকে ভালো কিছু শ্রোতাদের দিতে পারি এই প্রত্যাশায় সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। ’

সঙ্গীতশিল্পী নিশিতা বলেন, ‘নতুন বছরে সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত হয়ে সঙ্গীতাঙ্গনে পাইরেসি দূর করে  যেন বাংলাদেশের শ্রোতাকে আমাদের গান দিয়ে ধরে রাখতে পারি সেই চেষ্টা করবো। সবার জন্য শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইল। ’

কণ্ঠশিল্পী কোণাল বলেন, ‘নতুন বছরে আমরা যেন শান্তিতে গান করতে পারি সবাই নিরাপদে বসবাস করতে পারি । আগামীতে দেশের সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার হয়ে বেশি বেশি চলচ্চিত্র নির্মিত হলে আমরা শ্রোতাদের বেশি বেশি গান শোনাতে পারব। আর নতুন বছরে শ্রোতাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে সবাই যেন নিজের প্রিয় শিল্পীর গান সিডি কিনে শোনেন। এই প্রত্যাশায় নতুন বছরে শ্রোতাদের জন্য আমার ভালোবাসা এবং অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ’

‘২০১৪ সালে বাংলা গানের মান যেন বাড়ে এবং শ্রোতারাও যেন আমাদের গান সিডি কিনে শোনে। কারণ আমরা অনেক কষ্টে শ্রোতাদের জন্য গান তৈরি করি তারা যদি গানটি টুক করে ডাউনলোড করে তাহলে আমাদের প্ররিশ্রম কষ্ট বৃথা হয়ে যায়। আগামী বছরের নতুন শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা রইল সবার প্রতি। ’ বললেন কণ্ঠশিল্পী কিশোর।

অস্থির সময় থেকে মুক্তি পেতে চান কণ্ঠশিল্পী জয় শাহরিয়ার। বললেন, ‘ রাজনৈতিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে সঙ্গীতাঙ্গনেও খারাপ প্রভাব পরেছে। নতুন বছরে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে সবার জন্য মৌলিক এবং ভালো গান তৈরি করার চেষ্টা করব। সবাইকে আমার ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা রইল। ’

বাংলাদেশ সময় : ২০৩০ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১
সম্পাদনা : গোলাম রাব্বানী, বিভাগীয় সম্পাদক বিনোদন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।