ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

শবেকদর আসলে কোন তারিখে?

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৫
শবেকদর আসলে কোন তারিখে?

মাসয়ালা : লাইলাতুল কদর কেন হাজার মাসের চেয়ে উত্তম এর সরাসরি উত্তর আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। তবে পবিত্র কোরআন ও একাধিক হাদিসের ভাবার্থ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ রাতে কোরআনে কারিম নাজিল হয়েছে বলে এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।

এর আগেকার হাজার হাজার মাস বা হাজার হাজার বছর তাওরাত, যবুর, ইনজিল প্রভৃতি আসমানি গ্রন্থ আল্লাহর বিধান জগতে নেতৃত্বদান করেছে। কোরআন নাজিলের কদরের রাত থেকে শুধু কোরআন আল্লাহর বিধান জগতে নেতৃত্ব দেয়া শুরু করেছে, আগেকার হাজার হাজার মাস-বছরের নেতৃত্ব দেয়া আসমানি গ্রন্থগুলোকে রহিত করেছে এবং আল্লাহর নবুওয়ত ও রিসালতের ঝাণ্ডা বনি ইসরাইলের কাছ থেকে বনি ইসমাইলের কাছে এসেছে। এ কারণে কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম হওয়া যুক্তিযুক্ত।

মাসয়ালা : লাইলাতুল কদর প্রতি বছর নির্দিষ্ট একই রাতে পারে বা বিভিন্ন রাতেও হতে পারে। হতে পারে এক বছর ২১ তারিখে, আরেক বছর ২৩ তারিখে এবং অন্য আরেক বছর ২৫, ২৭ বা ২৯ তারিখে। আবার একই বছরেও অঞ্চলভিত্তিক বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক একাধিক রাত লাইলাতুল কদর হতে পারে। যেমন বাংলাদেশে ২৭ তারিখ এবং সৌদি আরবে ২৯ তারিখ। প্রকৃত ব্যাপার আল্লাহতায়ালা ভালো জানেন।

মাসয়ালা : লাইলাতুল কদর কত তারিখ এ বিষয়ে ৪০টির অধিক মত রয়েছে। তবে কোরআন ও হাদিসের আলোকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মত হলো রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতের যে কোনো এক রাতে অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাতে।

মাসয়ালা : ২৭ তারিখে লাইলাতুল কদর একেবারে সুনির্দিষ্ট- এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। তবে বহুসংখ্যক প্রমাণ রয়েছে যে, ২৭ তারিখে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক। একে শুধু সম্ভাবনা হিসেবে গ্রহণ করা যায়, সুনিশ্চিত হিসেবে নয়। সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিমের একাধিক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা 'শেষ সাতে' লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। -সহিহ বোখারি: ৩/৪৭, ২০২২

শেষ সাতের দুটি অর্থ একটি হলো, সপ্তম দিনে অর্থাৎ ২৭ তারিখে অথবা শেষ সাতটি রাতের যে কোনো একটি রাতে। মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত এক সহিহ হাদিসে (শায়খ আলবানীও সহিহ বলেছেন) আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন তা ২৭ তারিখে অনুসন্ধান করে। -মুসনাদে আহমাদ: ৮/৪২৬, হা. নং : ৪৮০৮, ১০/৪৯৩, হা. নং: ৬৪৭৪

মাসয়ালা : এ রাতে বেশি বেশি নামাজ পড়ার ইবাদত করা উচিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কদরের রাতে ঈমান ও ইহতিসাবের সঙ্গে নামাজে দাঁড়ায় তার আগেকার সব পাপ মার্জনা করে দেয়া হয়। -সহিহ বোখারি: ১/১৬, হা. নং: ৩৫

ইমাম বোখারি তার গ্রন্থে একটি অনুচ্ছেদের নাম দিয়েছেন, শবেকদরের রাতে নামাজ আদায় ঈমানের অন্যতম বিষয়। -১/১৬

আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর এক হাদিসে জানা যায়, এ রাতে দোয়া করতে হয় এই বলে, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা-ফু আন্নি। -মুসনাদে আহমাদ: ৪২/২৩৬, ২৫৩৮৪, ৪২/৪৮৩, ২৫৭৪১

মাসয়ালা : কদর বলতে রমজানের শবেকদর বোঝায়। কারণ এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় (মানুষের ভাগ্য) নির্ধারিত হয়। -সূরা দুখান: ৪

মাসয়ালা : লাইলাতুল কদরে আপনি যা যা করতে পারেন তা হচ্ছে, নফল নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, কবর জিয়ারত, তওবা-ইস্তেগফার, জিকির-আজকার, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণা ও গরিবদের অন্নদান ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘন্টা, জুলাই ১৩, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।