ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

ইতেকাফ কোথায় করবেন, কীভাবে করবেন

কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৫
ইতেকাফ কোথায় করবেন, কীভাবে করবেন

মাসয়ালা : পুরুষরা শুধু মসজিদে ইতেকাফ করতে পারে। ইতেকাফের সর্বোত্তম স্থান হলো মসজিদে হারাম, এরপর যথাক্রমে মসজিদে নববী, মসজিদে আকসা ও যে কোনো জামে মসজিদ।

জামে মসজিদে ইতেকাফ উত্তম। কারণ জুমার জন্য অন্যত্র যেতে হবে না। কিন্তু জামে মসজিদে ইতেকাফ করা জরুরি নয়। বরং যেসব শরয়ি মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়, সে মসজিদে ইতেকাফ করতে পারে। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন প্রতিটি মসজিদে ইতেকাফ শুদ্ধ যে মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিযুক্ত আছে। -দারেকুতনি; ফিকহুস সুন্নাহ; দুররে মুখতার: ২/৪৪১; ফাতাওয়ায়ে শামি: ২/১২৯

মাসয়ালা : ইতেকাফের সবচেয়ে বড় রুকন হলো ইতেকাফের পুরো সময় মসজিদের সীমানায় অবস্থান করা। শরয়ি প্রয়োজন তথা শরিয়তস্বীকৃত বাধ্যবাধকতা ছাড়া মসজিদের সীমানা থেকে বাইরে না যাওয়া। শরয়ি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদের সীমানার বাইরে সামান্য সময়ও অবস্থান করলে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।

মসজিদের সীমানা
অনেক লোক মসজিদের সীমানা সম্পর্কে অবগত নন। এ কারণে অনেকের ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যায়। অতএব মসজিদের সীমানা সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রয়োজন।

সাধারণত মসজিদের পুরো বাউন্ডারিকেই মসজিদ বলে। অথচ মসজিদের পুরো বাউন্ডারি মসজিদের শরয়ি সীমানা হওয়া আবশ্যক নয়। বরং শরিয়তের দৃষ্টিতে মসজিদের সীমানা ওইটুকুই, যেটুকু স্থান মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা ওয়াকফ করার সময় মসজিদের নিয়ত করেছেন।

জমিনের কোনো অংশ মসজিদ হওয়া এক জিনিস আবার মসজিদের বিভিন্ন প্রয়োজনে ওয়াকফ করা আরেক জিনিস। শরিয়তের দৃষ্টিতে মসজিদ শুধু ওই স্থানকে বলা হয়, যে স্থানকে শুধু নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মসজিদ বলে সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু প্রতিটি মসজিদেই এমন কিছু জায়গা থাকে, যে জায়গা মসজিদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তায় ওয়াকফ করা হয়। যেমন অজুর স্থান, ইস্তিঞ্জার স্থান, গোসলখানা, ইমাম সাহেবের হুজরা ইত্যাদি। এগুলো মসজিদের হুকুমের বাইরে। ইতেকাফকারী শরিয়তস্বীকৃত প্রয়োজন ব্যতিরেকে এসব স্থানে গেলে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।

কিছু কিছু মসজিদে তো এসব স্থান মসজিদ থেকে পৃথক থাকে। তাই এই স্থানগুলো যে মসজিদের বাইরের অংশ তা সহজে অনুমান করা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ মসজিদে এসব প্রয়োজনীয় অংশ মসজিদের সঙ্গে লাগানো ও সম্পৃক্ত থাকে। তাই প্রত্যেকে জ্ঞাত হয় না যে, এসব মসজিদের অন্তর্ভুক্ত নয়। অনেক সময় মসজিদের সিঁড়ি, যা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা হয় তা মসজিদের সীমানার অন্তর্ভুক্ত থাকে না। সেরূপ স্থানেও ইতেকাফকারী বিনা কারণে গেলে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বা ইমামের কাছে মূল মসজিদের সীমানা কতটুকু, তা জেনে নেওয়া ইতেকাফকারীদের জন্য আবশ্যক।

ইতেকাফকারীর কাজ
কথা বলার সময় নেকির কথা বলা, কোরআন মাজিদ অধ্যয়ন করা, দরূদ শরীফ পড়া, নফল নামাজ পড়া, দ্বীনী ইলম হাসিল করা কিংবা অপরকে শিক্ষাদান করা, ওয়াজ-নসিহত করা ইতেকাফকারীর জন্য মোস্তাহাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘন্টা, জুলাই ১০, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।