ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

‘তারাবিতে পঠিতব্য আয়াতের তাফসির’

আল্লাহতায়ালা জান্নাতের বিনিময়ে মুমিনদের কাছে যা চান

মুফতি মাহফুযূল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৫
আল্লাহতায়ালা জান্নাতের বিনিময়ে মুমিনদের কাছে যা চান

আজ ৮ম তারাবি। আজকের খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনে কারিমে ১১নং পারা তেলাওয়াত করা হবে।

আজ সূরা তওবার ৯৪নং আয়াত থেকে শুরু করে এই সূরা শেষে সূরা ইউনুস সম্পূর্ণ ও সূরা হুদের ৫নং আয়াত পর্যন্ত তেলাওয়াত করা হবে।

সূরা তওবার আজকের তেলাওয়াতকৃত অংশের উল্লেখযোগ্য বিষয়াবলী হলো-

১০০নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাহাবাদের প্রতি নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

১০৭নং আয়াতে মসজিদের জিরারের আলোচনা করা হয়েছে। আয়াতে বলা হয়েছে, এ মসজিদ বানানোর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের ক্ষতি করা, মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করা। আয়াতে এও বলা হয়েছে, এটা মূলতঃ কোনো মসজিদ বরং এটা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার গোপন ঘাঁটি বিশেষ।

১০৮নং আয়াতে মসজিদে কোবার প্রশংসা করা হয়েছে। ১১১নং আয়াতে উল্লেখ আছে আল্লাহতায়ালা জান্নাতের বিনিময়ে মুমিনদের জান ক্রয় করে নিয়েছেন।

১১৩নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, কোনো মুশরিক আত্মীয় হলেও তার ক্ষমা প্রার্থনা করা নবীর জন্য জায়েজ নেই, এটা মুমিনদের জন্যও জায়েজ নেই।

১১৮নং আয়াতে সাহাবি কাব ইবনে মালেক, হেলাল ইবনে উমাইয়্যা ও মুরারা ইবনুর রবী (রা.)-এর কথা আলোচনা করা হয়েছে। তারা নিছক আলসেমি করে, যাই যাই করে তাবুক যুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি। যুদ্ধে অংশ না নেয়ার মতো কোনো গ্রহণযোগ্য কারণ তাদের ছিল না। নবী (সা.) জিহাদ থেকে ফিরে আসলে তারা মুনাফেকদের মতো কোনো কপটতা ও ছল-চাতুরির আশ্রয় না নিয়ে নিজের অলসতার কথা অকপটে স্বীকার করে নেয়। আল্লাহতায়ালা এ আয়াতে তাদের তওবা কবুলের সুসংবাদ প্রদান করেন।

১২২নং আয়াতে সবাইকে একত্রে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মুসলিমদের একটি দলকে সবসময় দ্বীনী শিক্ষায় নিয়োজিত রাখতে।

সূরা ইউনুস
সূরা ইউনুস একটি মক্কি সূরা। এর মোট আয়াত সংখ্যা ১০৯টি। এ সূরার উল্লেখযোগ্য বিষয়াবলী হলো-

১৩-১৪নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের পূর্বে অনেক মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি। কেননা, তারা সীমালংঘন করেছিল। স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের কাছে রাসূল এসেছিল। কিন্তু তারা তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিল না। এভাবেই আমি গুনাহগার পাপী সম্প্রদায়কে শাস্তি দিয়ে থাকি। অতঃপর তাদের পর পৃথিবীতে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করেছি। তোমরা কেমন আচরণ করো তা দেখব।

১৮নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তারা আল্লাহ ব্যতীত আর যাদের ইবাদত করে তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। কোনো উপকারও করতে পারে না। তারা বলে এগুলো আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করবে। হে নবী আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশ ও পৃথিবীর এমন কোনো সংবাদ দিচ্ছ যা আল্লাহ জানেন না। তিনি মহান ও পবিত্র। তারা যাকে আল্লাহর শরিক করতে চাচ্ছে তিনি তা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।

৭১-৭৪নং আয়াতে হজরত নুহ (আ.) এবং তার অনুসারীদের হেফাজত করে অবাধ্য উম্মতকে প্লাবনে নিমজ্জিত করার ঘটনা আলোচনা করা হয়েছে।

৭৫-৯২নং আয়াতে হজরত মুসা (আ.) ও হজরত হারুন (আ.) এবং অবাধ্য অত্যাচারী শাসক ফেরাউনের বৃত্তান্ত আলোচনা করা হয়েছে।

১০৭নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যদি আল্লাহতায়ালা তোমাকে কষ্ট দেন তবে কেউ সে কষ্ট দূর করতে পারবে না। আর আল্লাহ যদি তোমার উপকার করতে চান তবে তার অনুগ্রহ কেউ প্রতিহত করতে পারবে না। তিনি নিজের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা মঙ্গল দান করেন।

১০৯নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তোমার কাছে যে ওহি পৌঁছেছে তুমি ধৈর্যের সঙ্গে মৃত্যু পর্যন্ত তা অনুসরণ কর।

সূরা হুদ
সূরা হুদ একটি মক্কি সূরা। এর মোট আয়াত সংখ্যা ১২৩টি। আজকের তারাবিতে এ সূরার প্রথম ৫টি আয়াত তেলাওয়াত করা হবে। এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করতে নিষেধ করা হয়েছে। নবী (সা.)-এর পরিচয় দেয়া হয়েছে, সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতারূপে। আমাদের বলা হয়েছে, আমরা যেন প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, তওবা করি। পক্ষান্তরে আমরা যদি আল্লাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই তবে মহাদিবসের শাস্তি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। বলা হয়েছে, প্রত্যেত মানুষকে অবশ্য অবশ্যই আল্লাহর ফিরে যেতে হবে। তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতা রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘন্টা, জুন ২৫, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।