ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

চাল না পেয়ে জেলেদের বিক্ষোভ, তদন্ত কমিটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:১৪, অক্টোবর ২০, ২০২৫
চাল না পেয়ে জেলেদের বিক্ষোভ, তদন্ত কমিটি জেলেদের বিক্ষোভ

বরগুনা: মা ইলিশ রক্ষায় অবরোধকালীন সময়ের চাল না পেয়ে চাওড়া ইউনিয়নের ২৫-৩০ জন জেলে বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে বিক্ষোভ শেষে তারা আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

 

ইউএনও অভিযোগটি আমলে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাওড়া ইউনিয়নের ৬৪২ জন জেলে রয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর সব জেলেকে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ১৪ অক্টোবর ২৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণের ছয় দিন পর কালবাড়ী, কাউনিয়া, পাতাকাটা ও চন্দ্রা গ্রামের অর্ধশতাধিক জেলে সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।  

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, জেলে কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাদের চাল দেওয়া হয়নি।

কালিবাড়ী গ্রামের জেলে মিলন হাওলাদার বলেন, আমি একজন কার্ডধারী জেলে। আমার জেলে কার্ড নম্বর ১০০৪০৯০০৪৭০০০০৩৩৪। আমাকে চাল দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, মাস্টার রোলে আমার নাম রয়েছে, তাহলে আমার চাল কে নিয়েছে? আমি জানতে চাই।

এভাবেই কার্ডধারী চালিতাবুনিয়া গ্রামের জেলে নাসির উদ্দিন, পাতাকাটা গ্রামের মো. নূর মোহাম্মদ হাওলাদার, চন্দ্রা গ্রামের কেরামত আকন, কাউনিয়া গ্রামের আশের্দ পহলান ও ঘটখালী গ্রামের মো. আবু বক্তর সিদ্দিকও চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

চাল না পেয়ে এসব জেলেরা সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করে এবং ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের পর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ইউএনও তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল, মেরিন ফিশারিজ অফিসার মো. অলিউর রহমান এবং উপজেলা ফেসিলিটেটর মো. মাইনুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিটির প্রধান আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, এখনও চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে তদন্ত শুরু করা হবে।

এদিকে চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, তালিকা অনুযায়ী ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে সব জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাশ বলেন, তালিকা অনুযায়ী ৬৪২ জন জেলের সব চাল উপজেলা পরিষদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ২০২০ সালে জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের তালিকা থেকে জেলে নয় এমন অনেকের নাম বাদ গেছে। বাদ পড়া জেলেদের কাছ থেকে জেলে কার্ড ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। হয়তো বাদ পড়া এসব জেলেরা এখন চাল চাইছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।