ঢাকা, শনিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

গাইবান্ধায় ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৪৪, অক্টোবর ৪, ২০২৫
গাইবান্ধায় ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ অ্যানথ্রাক্স

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে একটি রোগাক্রান্ত গরু জবাইয়ের পর অন্তত ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সাতজন গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন, আর বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আক্রান্তরা গাইবান্ধা শহরের রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম ও রাবেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নেন।

গুরুতর আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমান।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সাতজন রোগীর হাতে, মুখে, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা, পচন, জ্বর, ব্যথা ও চুলকানি দেখা গেছে। এটি অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ। আক্রান্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তবে এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়, আক্রান্ত পশু জবাই বা মাংস কাটার সময় সংক্রমণ ঘটে। নিয়মিত চিকিৎসায় তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাফিজার রহমান জানান, গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মাহবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করে প্রায় ১২০ জনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। জবাই ও মাংস কাটাকাটিতে ১০–১৫ জন সরাসরি জড়িত ছিলেন। চারদিন পর থেকে তাদের মধ্যে অনেকের শরীরে ফোসকা ও ঘা দেখা দেয়। কেউ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন, আবার কেউ পরে ক্লিনিকে ভর্তি হন।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, বৃহস্পতিবার ৪-৫ জন রোগী অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের গাইবান্ধা অথবা রংপুর মেডিকেলে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, পাশের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ছিল, যা এখন সুন্দরগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা ও পৌরসভা এলাকায় রোগটি শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় টিকাদান কর্মসূচি চলছে। তিনি আরও বলেন, রোগাক্রান্ত পশু জবাই বা পরিচর্যার মাধ্যমে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে, তবে মাংস খাওয়ার মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স ছড়ায় না।

অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে এলাকায় লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। আক্রান্ত পশু জবাই না করার বিষয়েও কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।