ঢাকা, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০১ জুন ২০২৫, ০৪ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

পটুয়াখালীতে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, দুর্ভোগে এক লাখের বেশি মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১২, মে ৩০, ২০২৫
পটুয়াখালীতে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, দুর্ভোগে এক লাখের বেশি মানুষ পটুয়াখালীতে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, দুর্ভোগে এক লাখের বেশি মানুষ

পটুয়াখালীতে অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের সম্মিলিত প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বর্ষণে অন্তত ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার আটটি উপজেলার ৬২টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভায় পানি প্রবেশ করে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক বসতঘর ও অবকাঠামো।

শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন স্বাক্ষরিত এসওএস ফরমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে প্রেরিত একটি প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ তথ্যে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ের মতো রূপ না নিলেও এবারকার স্থল গভীর নিম্নচাপ পটুয়াখালীতে ফেলে গেছে ব্যাপক ক্ষতির ছাপ।  

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলার আটটটি উপজেলার ৬২টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভায় আনুমানিক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩০ জন। এতে এক হাজার ২৭৭টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত ও ৯টি বাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।

তবে জেলায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ টাকার জরুরি ত্রাণ সহায়তা দাবি করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে উপকূল অতিক্রম করা নিম্নচাপটি বর্তমানে সাতক্ষীরা অঞ্চলে স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। তবে এর প্রভাবে পটুয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯.০৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দরে।

জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গেছে বাঁধ, নদীতীরে ভাঙন

এদিকে, কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলার বহু এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শত শত ঘরবাড়ি, ঘের ও কৃষিজমি। অনেক জায়গায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে উঁচু বাঁধ বা স্কুলে ঠাঁই নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অনেক বাঁধ দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় দুর্যোগের চাপ সহ্য করতে পারেনি। ঘূর্ণিঝড় না হয়েও এমন ক্ষয়ক্ষতি তাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে।

স্থানীয়রা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের ঘূর্ণিঝড় যেমন ‘সিত্রাং’, ‘মোখা’ বা ‘বুলবুল’-এর তুলনায় এবারের গভীর নিম্নচাপে ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়েছে। এর অন্যতম কারণ—এই নিম্নচাপ স্থলভাগে উঠে দীর্ঘ সময় সক্রিয় থাকায় এবং অমাবস্যার জোয়ারের সঙ্গে মিলিত হয়ে উচ্চমাত্রার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, অনেক বাঁধ দুর্বল ও অপর্যাপ্ত থাকায় ক্ষতি বহুগুণে বেড়েছে।

এখনো ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরি খাদ্য বা চিকিৎসাসেবা না লাগলেও, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে প্রশাসন। পানিবন্দি মানুষদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও আর্থিক সহায়তা দ্রুত পৌঁছে দিতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা দেলোয়ার হোসেন।

এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।