ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদের রমজান আয়োজন

আতাউর রহমান খসরু, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদের রমজান আয়োজন উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদের রমজান আয়োজন

উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ উত্তর কোরিয়া। ১৯৪৮ সালে সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের ভিত্তিতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে পৃথক হয়ে যায়। কমিউনিস্ট শাসিত এ রাষ্ট্রে ধর্ম পালনে রয়েছে কড়া বিধি-নিষেধ।

সাধারণভাবে উত্তর কোরিয়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় খোলার অনুমতি নেই। তবে রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সরকার বৌদ্ধ ও খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীদের কয়েকটি উপাসনালয় খোলার অনুমতি দিয়েছে।

কোয়ীয় উপদ্বীপে ইসলামের আগমন ঘটে ১৫শ’ খ্রিস্টাব্দে। ফিলিপাইনের মুসলমানদের মাধ্যমে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে পনের শতকে নির্মিত একটি মসজিদও রয়েছে। তবে রসহ্যজনকভাবে কোরীয় উপদ্বীপে ইসলামের উল্লেখযোগ্য প্রসার ঘটেনি। উত্তর কোরিয়ার ইসলামের প্রসার ঘটেছে আরও কম।

বর্তমানে উত্তর কোরিয়ায় কয়েক হাজার মুসলিম রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। উত্তর কোরিয়ার স্থানীয় মুসলিমদের কোনো মসজিদ নেই। তবে কয়েক বছর পূর্বে ইরান উত্তর কোরিয়ায় আর রহমান নামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে। ২০১০ সালে ইরানি দূতাবাসের সীমানায় নির্মাণ করা হয় উত্তর কোরিয়ার প্রথম ও একমাত্র মসজিদটি।

অন্যান্য মুসলিম দেশের দূতাবাসে নামাজের জায়গা থাকলেও পৃথক কোনো ভবন নেই। তাই ধরে নেওয়া হয়- আর রহমান মসজিদই উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদ।
উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদের রমজান আয়োজন
মসজিদটি দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য নির্মাণ করা হলেও তাতে নামাজ পড়ার সুযোগ রয়েছে সাধারণ মুসলমানদেন। কূটনৈতিক পাড়ায় অবস্থিত এ মসজিদে উত্তর কোরিয়ায় দায়িত্বরত মুসলিম কূটনৈতিকরাই বেশি নামাজ আদায় করেন। কখনও কখনও বিভিন্ন দেশের মুসলিম পর্যটকদেরও এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।

রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধের কারণে রমজানে ধর্মীয় আয়োজনের খুব বেশি সুযোগ নেই উত্তর কোরিয়ায়। তবুও রমজান উপলক্ষ্যে আর রহমান মসজিদের কিছু আয়োজন থাকে।

বছরের অন্যান্য সময় সাধারণত শুধু জুমা ও ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিরা মসজিদে উপস্থিত হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিজ নিজ বাড়ি বা দূতাবাসে আদায় করে। কিন্তু রমজানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেই অংশগ্রহণ করেন অনেকেই।

রজমানে আর রহমান মসজিদের আশপাশের মুসলিমগণ এক সঙ্গে ইফতার ও সাহরি করেন। ইফতার ও সাহরিতে মসজিদের কিছু আয়োজন থাকলেও প্রত্যেকে নিজ নিজ ঘর থেকে কিছু কিছু খাবার নিয়ে আসেন এবং সবাই তা ভাগাভাগি করে খান।
 
রমজানে দীর্ঘ সময় মসজিদে কাটান অনেকেই। মসজিদে সংরক্ষিত কোরআন ও ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করেন। নামাজ বা অন্যকোনো ইবাদতে সময় ব্যয় করেন।

শিয়া মতাবলম্বীরা তারাবি পড়েন না। তাই মসজিদে তারাবির নামাজের জামাত হয় না। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছে করে, তবে সে এশার নামাজের পর একাকি তারাবি আদায় করতে পারেন।

শিয়া ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী ১৯-২১ রমজান পর্যন্ত মসজিদে সারারাত বিশেষ ইবাদত ও প্রার্থনার আয়োজন হয়। এ প্রার্থনায় সুন্নি মুসলিমরাও অংশগ্রহণ করেন কখনও কখনও।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।