২০০ টাকার খাঁচা ৬০০, গাছও বেশি দামে কিনছে ডিএনসিসি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১০:২১, জুন ২৪, ২০২৩
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের লোগো

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের লোগো

ঢাকা: এ বছর তীব্র তাপদাহের পর ফুটপাত ও সড়ক বিভাজকে বৃক্ষ রোপণ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এসব গাছের চারা এবং চারার নিরাপত্তার জন্য খাঁচা বেশি দামে কেনার অভিযোগ ওঠেছে। বর্তমান বাজারদরের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে বাঁশের খাঁচা কেনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের ঘোষণা অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটিতে দুই লাখ গাছ লাগানোর কর্মসূচি শুরু হয়েছে। গত ৬ জুন তেজগাঁওয়ে আনিসুল হক সড়কের ফুটপাত ও সড়ক বিভাজকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। ফুটপাত, সড়ক বিভাজক ও খালের পাড়ে কী ধরনের গাছ লাগানো হবে, এ নিয়ে একটি নির্দেশিকা বানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি।

গাছের চারার নিরাপত্তায় সাধারণত, ছিপ বা নলি বাঁশের তৈরি চার ফুট উচ্চতা ও দেড় ফুট প্রস্থের একটি খাঁচা ও দুটি খুঁটি ৬০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। অথচ সেগুলো বাজারে পাওয়া যায় ২০০ টাকায়। 

এছাড়াও, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারাও বেশি দামে কিনছে সংস্থাটি। ছাতিম, বকুল, কাঠবাদাম, কৃষ্ণচূড়া ও সোনালুগাছের তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার প্রতিটি চারা কিনছে ২৫০ টাকায়। যদিও ছাতিম বাদে অন্য গাছের চারা নার্সারিতে পাওয়া যায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়া এক থেকে দেড় ফুট আকারের কাঁটা মেহেদি, রঙ্গন, করবী, বাগানবিলাস ও বামন জারুলের চারাগুলোর দাম নার্সারিতে ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা হলেও প্রতিটি ৯০ টাকায় কেনা হচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রায়েরবাজার এবং উত্তরার বিভিন্ন স্পটে নার্সারির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে গাছের চারার এমন দাম জানা যায়। খাঁচা বিক্রেতাদের কাছে খাঁচার দামের কথাও জানা গেছে।

উত্তরায় বাঁশ ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাইকারি বিক্রেতা মজিদ মিয়া বলেন, ছিপ বা নলি বাঁশের তৈরি তিন ফুট উচ্চতা ও দেড় ফুট প্রস্থের বাঁশের খাঁচা ১৫০ টাকা ও দুটি খুঁটিসহ ২০০ টাকা।

সিটি করপোরেশনের পরিবেশ সার্কেল থেকে জানানো হয়, ছোট চারা ১০ টাকায় এবং বড় চারা ২০০ টাকায় তাদের কিনতে হচ্ছে। বিভাজকের ছোট চারার আকার এক থেকে দেড় ফুটের। আর ফুটপাতে লাগানো হবে তিন থেকে চার ফুটের চারা।

উত্তরার একটি নার্সারির মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বড় চারা তিন থেকে চার ফুট হলে বকুল ও কাঠবাদাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা, কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। তবে একই আকারের ছাতিমের ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ছোট কাঁটা মেহেদি, করবী, দেশী বাগানবিলাস ও জারুলের চারা পলিথিনের প্যাকেটে হলে ২০ থেকে ৩০ টাকা, সিমেন্টের বস্তার প্যাকেটে হলে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করেন।

বেশি দামে বাঁশের খাঁচা ও গাছের চারা কেনার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা উত্তর সিটির একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, মেয়রের ঘোষণা মোতাবেক দুই লাখ গাছ লাগানোর কর্মসূচি তাদের পরিকল্পনায় ছিল না। তাই গাছের চারা ও বাঁশের খাঁচা সরবরাহে দরপত্র আহ্বান কিংবা ঠিকাদার কিছুই নিয়োগ করা হয়নি।

ওই কর্মকর্তা জানান, বিভাগের বিভিন্ন কাজের জন্য এক বছর মেয়াদি ফ্রেমওয়ার্ক কন্ট্রাক্টে একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর নিয়োগ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নির্ধারিত পরিমাণ টাকার মধ্যে ওই ঠিকাদার বছরব্যাপী বিভাগের বিভিন্ন কাজ করেন। মেয়র ঘোষিত দুই লাখ গাছ ও গাছের চাটা লাগানোর কর্মসূচিতেও আপাতত এই ঠিকাদারের মাধ্যমেই করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গাছের চারার বিভিন্ন ধরনের দাম হতে পারে। গাজীপুর গেলে ঢাকার চেয়ে সস্তা। আবার বগুড়ায় গেলে আরও সস্তায় পাওয়া যেতে পারে। এগুলোর শেষ নেই। তবে যদি কোনো দুর্নীতি হয় আর এর যদি প্রমাণ পাই, সে যে-ই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
এসআইএ


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান