মাছের সেক্স পরিবর্তনের রহস্য উদঘাটিত

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৫:২৫, অক্টোবর ৭, ২০১০

ময়মনসিংহ: সমুদ্রের কিছু মাছ জীবনের নির্দিষ্ট এক সময়ে সেক্স পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে স্ত্রীতে ও স্ত্রী থেকে পুরুষমাছে রূপান্তরিত হয়। ঠিক কী কারণে এসব মাছ সেক্স পরিবর্তন করে, তা এতদিন বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা ছিল।

সম্প্রতি, জাপানের ওকিনাওয়ার রিউকিউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিরত বাংলাদেশি ছাত্র ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম এ অজানা রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছেন।

ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম ১৯৭৭ সালে টাঙ্গাইল জেলার মগড়া ইউনিয়নের ভিতর শিমুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। টাঙ্গাইলে পড়াশুনা শেষ করে ১৯৯৩-১৯৯৪ শিাবর্ষে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি হন এবং ১৯৯৭ সালের বি.এস.সি. ফিসারিজ অনার্স চূড়ান্ত পরীায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথমস্থান লাভ করেন।

২০০২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে এ প্লাস প্রাপ্ত হন। ২০০৩ সালে তিনি জাপান সরকার প্রদত্ত মনোবুকাগাকুশো বৃত্তি নিয়ে জাপানের ওকিনাওয়ার রিউকিউ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এস. শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাছের সেক্স পরিবর্তনের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

ড. আলম মাছের সেক্স পরিবর্তন সম্পর্কে জানান, ‘সেক্স পরিবর্তনকারী মাছের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কোরাল রীফে (প্রবালের খাঁজ) বসবাসকারী গ্র“পার (এৎড়ঁঢ়বৎ) মাছ। এ গ্র“পারমাছ প্রথমে স্ত্রী হিসেবে জন্মগ্রহণ করে পরিপক্কতা লাভ করে এবং এক বা একাধিকবার প্রজননে অংশ নেয়।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে এসব স্ত্রীমাছ সেক্স পরিবর্তন করে পুরুষমাছে রূপান্তরিত হয় এবং সক্রিয় পুরুষমাছ হিসেবে প্রজননে অংশগ্রহণ করে।’
      
তিনি বলেন, ‘মজার ব্যাপার হলো, এসব মাছ আর কখনোই আগের সেক্সে ফিরে যেতে পারে না। কিন্তু কীভাবে এ গ্র“পার (এৎড়ঁঢ়বৎ) মাছ সেক্স পরিবর্তন করে সক্রিয় পুরুষমাছে রূপান্তরিত হয়, সেটিই ছিল আমার গবেষণার বিষয়।’

ড. আলম জানান, প্রথমবারের মতো তিনি গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, স্ত্রী মাছের গোনাডের (প্রজনন অঙ্গ) মধ্যে এক ধরনের বিশেষ কোষ আছে যা পুরুষ হরমোন (এন্ড্রোজেন) তৈরি করে। সাধারণত, এসব মাছ যখন তার মূল দৈর্ঘ্যরে দুই-তৃতীয়াংশ বড় হয়, তখনই এ বিশেষ কোষগুলো এন্ড্রোজেন তৈরি শুরু করে এবং স্ত্রীমাছ ধীরে ধীরে পুরুষ মাছে রূপান্তরিত হয়।
      
তিনি জানান, এ পরিবর্তনের সময় স্ত্রীমাছের জিনগুলো ধীরে ধীরে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে এবং তাদের প্রকাশ (ঊীঢ়ৎবংংরড়হ) কমে যায়। অন্যদিকে, এ সময় পুরুষমাছের জিনগুলো সক্রিয় হয় এবং এদের প্রকাশের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এভাবেই স্ত্রীমাছটি পুরুষমাছে রূপান্তরিত হয়।

ড. আলমের এ গবেষণা সম্পর্কিত ১০টি নিবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. আলমের জাপানের পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক মাশারু নাকামুরা জানান, ‘এটি একটি অনবদ্য ও যুগান্তকারী উদ্ভাবন। এর ফলে কৌলিতত্ত্ব গবেষণায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো ।

ড. আলম জানান, ‘বাংলাদেশের সমুদ্রে প্রবালের খাঁজে ভেটকি বা কোরাল মাছও একইভাবে সেক্স পরিবর্তন করে।’

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫, অক্টোবর ০৭, ২০১০


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান