ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

এপিএসসিএলে জালিয়াতি

তদন্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪১ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৫
তদন্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) উচ্চ সুদে ঋণগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগে জালিয়াতির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 
রোববার (০৭ জুন) পরিকল্পনা কমিশনে তদন্ত কমিটির প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

 

বৈঠকে দরপত্রের সব তথ্য প্রমাণ ও বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুষ লেনদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান আরস্তু খান বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠক হয়েছে এবং এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে এটুকু বলতে পারি। এর বেশি এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না।
 
তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, সানফ্রান্সিসকো শহরের ‘ওয়েলস ফারগো’ ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের যে বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ওয়েলস ফারগো ব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হবে।

এছাড়া কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে যে গোপন লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ চাওয়া হবে। সেজন্য দরপত্রের কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখার বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
 
এপিএসসিএল’এ উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগ করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ৬ মিলিয়ন ডলার উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ২ মিলিয়ন ডলার সানফ্রান্সিসকো শহরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি নিউজ বাংলানিউজ ও দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয় (২৫ মে, সোমবার)।

ওই সংবাদদের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ মে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রধান করা হয় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরস্তু খানকে।

কমিটিতে রয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব হুমায়ুন কবীর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রকাশিত খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রথমদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের তোড়জোড় দেখা গেলেও এখন কিছুটা ভাটার টান দেখা যাচ্ছে। প্রধান অভিযুক্ত বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও এপিএসসিএল’র চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা উঠেছিল, যাতে তদন্ত প্রভাবিত করতে না পারেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সেই উদ্যোগ থেকে কিছুটা সরে এসেছে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, এপিসিএল’র ৪৫০ মেগাওয়াট সাউথ পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য হেজিং পদ্ধতিতে এইচএসবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ও ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৩ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে, যার জন্য সাড়ে তিন শতাংশ হারে সুদ গুণতে হবে বাংলাদেশকে।
 
অন্যদিকে, একই ঋণ লাইবর পদ্ধতিতে নেওয়ার সুযোগ ছিল। লাইবর পদ্ধতিতে সুদের হার দশমিক চার শতাংশ বিরাজ করছে। ১৯৯৯ সাল থেকেই নিম্নমুখী এই সুদের সূচক।
 
অভিযোগ উঠেছে, উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে গোপন লেনদেন করা হয়েছে। সানফ্রান্সিসকো শহরের ‘ওয়েলস ফারগো’ ব্যাংকের একটি শাখায় এপিএসসিএল’র সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ছেলে মাহফুজ আলমের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এই লেনদেন হয়েছে।

স্পেনের একটি ব্যাংক থেকে দুই মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার (পাঠানো) করা হয়েছে।

আশুগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিটটির নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে, একটি স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠান। সে কারণে সন্দেহ আরও জোরালো হচ্ছে। এ ছাড়া নিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে বেশি দরে কাজ দেওয়ার বিষয়েও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৯ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৫
ইএস/এসএইচ

** তদন্ত কমিটি বসছে রোববার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।