ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নতুন মাইল ফলকে বিদ্যুৎ খাত

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৫
নতুন মাইল ফলকে বিদ্যুৎ খাত ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

নাটোর থেকে: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত আরও একটি মাইল ফলক ছুঁতে যাচ্ছে রোববার (৩ মে)। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে নতুন ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।



যেগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩১৫ মেগাওয়াট। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে এদিন মেঘনা ঘাট-আমিনবাজার ৪০০ কিভি ট্রান্সমিশন লাইন ও রাজধানীর লালবাগে নবনির্মিত ১৩২/৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন উদ্বোধন করা হবে।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- তেল ভিত্তিক তিনটি এবং গ্যাস ভিত্তিক একটি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে তেল (ফার্নেস অয়েল) ভিত্তিক রাজশাহী (নাটোর) ৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র। শ্রীলংকার কোম্পানি রাজলঙ্কা পাওয়ার ও বাংলাদেশি একটি কোম্পানি যৌথ মালিকানায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ।

কেন্দ্রটিতে মোট ৬টি ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮.৯ মেগাওয়াট। তেল ভিত্তিক হওয়ায় তুলনামুলক উৎপাদন খরচ বেশি। এক কিলোওয়াট আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হবে প্রায় ১৫ টাকার মতো।

তবে একটি সুবিধা হচ্ছে খুব কম সময় অর্থাৎ ৩০ মিনিটের মধ্যে পুর্ণাঙ্গমাত্রায় উৎপাদনে যেতে সক্ষম। আবার জরুরি মুহূর্তে ১০ মিনিটে বন্ধ করা সম্ভব বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ম্যানেজার লংকা তিলকারত্নে বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ যেহেতু রিজার্ভ করে রাখা যায় না। অন্যদিকে খুব দ্রুত ওঠানামা করে চাহিদা। সে কারণে সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাখা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি, আবার যদি সরবরাহের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি হয় তাহলেও ব্লাক আউটের মতো বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

নাটোর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য শ্রীলংকার এই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা অপর দু’টি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে গগনগর নারায়ণগঞ্জ ১০২ মেগাওয়াট ও কাঠপট্টি (মুন্সীগঞ্জ) ৫২ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট। এ ছাড়া ঘোড়াশাল ১০৮ মেগাওয়াট গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন প্রসঙ্গে নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। শনিবার (২ মে)সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কেন্দ্রে মহড়া হবে।

ভিন্ন একটি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেছিলেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দ্রুতই অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছি। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে সম্ভব এটা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৭২ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিদ্যুতের আওতায় চলে এসেছে। মোট গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। কিন্তু তার অনেক আগেই বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া সম্ভব হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ১৩ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর গীষ্মকালে সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে ৮ হাজার মেগাওয়াটের। অন্যদিকে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে।

বর্তমানে ৯১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে রয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ৭৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন চুক্তি করে। এর মধ্যে ৬৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে যেগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৫
এসআই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।