ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

তরুণদের নিয়ে আগামীর রাজনীতি করতে চান গণফোরামের মন্টু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
তরুণদের নিয়ে আগামীর রাজনীতি করতে চান গণফোরামের মন্টু

ঢাকা: প্রবীণদের অভিজ্ঞতা এবং তরুণদের উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আগামী দিনের রাজনীতি পাড়ি দিয়ে চান গণফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু।  

তিনি বলেছেন, তরুণদের ছাড়া সংগঠনকে দাঁড় করানোর কোনো উপায় নেই।

আমাদের সংগঠন আজকে যে ভালো অবস্থানে নেই তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই বছর নানা দুর্যোগের মধ্য দিয়ে পার করতে হয়েছে।  

শনিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি, দুঃশাসন হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ শীর্ষক গণফোরাম ঢাকা মহানগর উত্তর-এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২০২২ উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে আনা হচ্ছে না উল্লেখ করে মন্টু বলেন, আগামীতে রাজনীতিতে আমাদের নতুন প্রজন্ম আসবে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিতে সামনে এগিয়ে আসার জন্য কোনো সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে না। কেন করে দেওয়া হচ্ছে না? কারণ তাদের বংশপরম্পরা রাজনীতি ধরে রাখার জন্য।  

অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুবকদের আটকে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন গণফোরামের সভাপতি।  

তিনি বলেন, ‘৫২ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারী শাসন পর্যন্ত অতীতের যত আন্দোলন হয়েছে প্রতিটাই ছাত্র ও যুব সমাজের দ্বারা হয়েছে। এ সসব আন্দোলনে জাতীয় নেতারা অংশ নেওয়ার আগেই ছাত্ররা এবং যুবকরা অংশ নিয়েছে। আজকে সেই যুবকদেরকেই আটকে দেওয়া হচ্ছে। কারণ অতীতের অভিজ্ঞতা বলে যখনই জাতীয় কোনো দুর্যোগ আসে এবং অন্যায়-অবিচার হয় তখনই এই যুবসমাজ এগিয়ে আসে এবং এই অপশক্তিকে দূর করে।

প্রধানমন্ত্রী নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্বারা নির্বাচিত হয়, এখন নিজেই তা চাননা উল্লেখ করেন মোস্তফা মোহসীন মন্টু।  

তিনি বলেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ এবং ২০১৮ এই দুইটি নির্বাচনে গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছেন। মাগুরার নির্বাচনে এই শেখ হাসিনাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। সে আন্দোলনে দেখা গেছে তখনকার যুবলীগের বদি নামের এক নেতা শহীদ হন। সেই শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায়ের মাধ্যমে উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নির্বাচিত হন। পরবির্তীতে তিনি এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে চিনেন না।

আওয়ামী লীগের নেতারা উদ্ভট বক্তব্য দেয় জানিয়ে মন্টু বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা এমন সব কথাবার্তা বলেন যাতে মরা মানুষ জিন্দা হয়ে যাবে। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের ওরে কথা! যুক্তি দিয়ে তারা যে সব উদ্ভট কথা বলেন তাতে ভাবতেও কষ্ট হয় এই দলের নেতৃত্বে নাকি সংবিধান হয়েছে। আর সেই সংগঠনের জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে নাকি এদের মতো নেতা আছে। আপনার আশেপাশে যে নেতারা আছেন তারা সবাই ঠগ বাটপার। আপনার যে প্রশাসন আছে তারা সবাই ঠগ। সব ঠগ বাটপারের সমন্বয় ঘটিয়েছেন আপনি।

নির্বাচন বিষয়ে গণফোরামের সভাপতি মন্টু বলেন, আমি আমার নেতাকর্মীদের বলে দিয়েছি। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া আমরা কোনো দিন নির্বাচনে যাব না। নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আমরা মাঠে থাকবো। আমাদের সঙ্গে সুরমিলিয়ে যারা মাঠে থাকবে আমরা তাদের সঙ্গেই থাকব।  

৭১-এর মতো গণতন্ত্রকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা-আল্লাহ। এজন্যই তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণ প্রজন্মের এগিয়ে আসা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

এসময় গণফোরামের নেতারা বলেন, সরকারি দল (আওয়ামী লীগ) এবং বিরোধী (বিএনপির) এই দুই দলের বাইরে তৃতীয় পক্ষকে দেশের ক্ষমতা নিতে হবে। তা না হলে দেশ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন না বলে জানান গণফোরামের নেতারা।  

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন গণফোরাম ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক এম এ কাদের মার্শাল। সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব এরশাদ জাহান সুমন।

উদ্ভোধক হিসেবে ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, নির্বাহী সভাপতি ও ট্রেজারার অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, সভাপতি পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, লায়ন মো. মনির হোসেন মনু প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
ইএসএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।