ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ জুন ২০২৫, ২২ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

সংসদের উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে নুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০২, জুন ১৯, ২০২৫
সংসদের উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে নুর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ছবি শাকিল আহমেদ

ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। তবে এ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

নুর বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থার কারণেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে সংসদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। কিন্তু গণঅধিকার পরিষদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ উভয় দ্বারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও, জেলা পরিষদ এবং সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ নির্বাচকমণ্ডলী দ্বারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাবও তাদের বিবেচনাধীন রয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদ বিশেষভাবে ভোটারদের চিহ্নিত করার পক্ষে মত দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবনায় ৬৪ জন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ১২ জন সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ মোট ৭৬ জনকে ভোটার হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে। এর সঙ্গে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ৫০০ সদস্যকে যুক্ত করে মোট ৫৭৬ সদস্যের একটি ইলেক্টরাল কলেজ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।  

নুর বলেন, কিছু দল ৭০ হাজার জনপ্রতিনিধি (ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল সংসদ সদস্য) দ্বারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে, আবার অনেক দল শুধুমাত্র পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সদস্যদের দ্বারা গোপন ব্যালটে নির্বাচনের পক্ষে। গোপন ব্যালটে ভোটগ্রহণের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করেছে।

নুর আরও বলেন, সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়ে দীর্ঘদিনের আলোচনা হয়েছে। অর্থবিল এবং আস্থা ভোট ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন ভোটাধিকারের বিষয়ে সার্বজনীন ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তিনি তৃতীয়ত, জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন, যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এনসিসি গঠিত হলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে এর ভূমিকা থাকবে, যা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনবে।

নুর বলেন, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে গণঅধিকার পরিষদ তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে আগ্রহী, যদি ক্ষমতা কমিশনের মাধ্যমে কোনো বিষয়ে ঐকমত্য হয়।

তবে, নুর দুটি দলের আলোচনা বা প্রস্তাবকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান কোনো একটি বা দুটি দলের নেতৃত্বে হয়নি। তাই কোনো একক দল বা বিশেষ কোনো ব্যক্তির সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত নয়।

নুর প্রশ্ন তোলেন, বর্তমান আলোচনায় এমন কিছু দল উপস্থিত রয়েছে যাদের কোনো কার্যক্রম নেই, এমনকি কিছু দল আগে আওয়ামী লীগে সহযোগী ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে গণঅধিকার পরিষদ প্রশ্ন তুলেছে এবং পরবর্তী বৈঠকে এর একটি সমাধান চাইবে।

নুর বলেন, যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি তাদের ক্ষমতার বেনিফিশিয়ারি ছিল, তাদের ১৪ দলে ছিল তারা যদি এ আলোচনায় থাকে এখানে আসে এটা এ জুলাইয়ের প্রতি অবমাননা। শহীদদের সঙ্গে বেইমানি। এটার বিষয়ে আমরা কম্প্রোমাইজ করব না। নেক্সট মিটিং থেকে এটার বিষয়ে আমাদের একটা জোরাল অবস্থান থাকবে।

আজকের ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংবিধান, রাষ্ট্রের মূলনীতি এবং নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।


ইএসএস/ এসবিডব্লিউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।