বরিশাল: এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা দক্ষিণাঞ্চল। তবে বিভাগের হেডকোয়ার্টার বরিশাল জেলার ১০টি উপজেলায় নির্বাচনী আমেজ ভিন্নতা পেয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বহু আগ থেকেই কৌশলী প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইচ চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা। এরই মধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগের নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী নিজ নিজ উপজেলায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। আবার অনেকে নিজ উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কৌশলে নিজের অবস্থান জানাচ্ছেন।
যদিও আওয়ামী লীগের বাহিরে এ নির্বাচনে বিএনপি বা তাদের শরিকদের অংশগ্রহণের তেমন কোনো খবর নেই। তবে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টিসহ জোটের দলগুলো থেকেও প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাচনে বরাবরের মতো এবারেও সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে বরিশাল সদর। এ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টুর পাশাপাশি সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের নাম। যদিও বিগত দিনে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে দলীয় সমর্থন না পাওয়া মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনের অংশগ্রহণের কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে তিনি বিগত দিনে সিটি ও সংসদ নির্বাচনের অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েও না করায় চূড়ান্তভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান মধু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চরকাউয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি ও মহানগর আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি আনোয়ার হোসাইন।
এছাড়া আলোচনায় থাকা বানারীপাড়ায় উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক এবারের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। তবে এখানে জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইচ চেয়ারম্যান মাওলাদ হোসেন সানা। এছাড়াও প্রার্থী হতে পারেন এমন আলোচনায় রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা পরিষদ সদস্য মামুন-উর রশিদ স্বপন তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মিন্টু।
এই উপজেলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ও জাসদ নেতা সাজ্জাদ হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
এছাড়া উজিরপুর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম জামাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুখেন্দ শেখর বৈদ্য ও ষোলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী হুমায়ুন কবিরের নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে।
এদিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাংলাদেশ জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বাদলও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রইস সেরনিয়াবাত, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মতুর্জা খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন সেরনিয়াবাত, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টির নাম আলোচিত হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা মনিরুন্নাহার মেরী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এইচ এম জয়নাল আবেদিন, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মনির হোসেন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ মুন্সি, উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক ও নলচিড়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিলীপ মাঝি, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনিচুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফারুক ব্যাপারী ও উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি আলমগীর উকিলের নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।
বাবুগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদ হোসেন স্বপন, সাবেক সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল এবং ভাইস চেয়ারম্যান ফরজানা বিনতে ওহাব সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।
বাকেরগঞ্জে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, যুবলীগের সহসস্পাদক রাজিব আহমেদ তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মিজানুর রহমান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান মাসুদের নামও আলোচনায় রয়েছে।
মুলাদীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান মিঠু খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইউসুফ আলী, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরুর নাম আলোচিত হচ্ছে। এছাড়া এখানে উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ মিয়ার নামও রয়েছে আলোচনায়।
হিজলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু, সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ মাহমুদ দিপু, জেলা আ. লীগ সদস্য শাহজাহান তালুকদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম স্বপন চৌধুরী এবং হরিনাথপুর ইউনিয়নের আ. লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুর রহমান সিকদারের নামও উঠে এসেছে।
এদিকে চলতি বছরের নভেম্বরে মেয়াদ শেষ হওয়া মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান এ কে এম মাহফুজুল আলম লিটন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাব আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য দেলোয়ার হোসেন দিলু, চরগোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল বারী মনির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদের নাম আলোচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
এমএস/এসআইএস