ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

চমক আসছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোতে

তানভীর আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৩
চমক আসছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোতে

ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। এ আন্দোলন বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে মহাসমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি, পদযাত্রা, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে ব্যস্ত দলটি।

 

তবে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলের সিনিয়র নেতা ও অঙ্গ সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নীতিনির্ধারণী মহলে। এ নিয়ে দলটির ভেতর-বাইরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

বিএনপির কয়েকটি সূত্র বলছে, বিশ্লেষণের পর পর্যায়ক্রমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অঙ্গ সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানো হতে পারে।  

সে অর্থে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোতে চমক আসছে।  

আন্দোলনে অঙ্গসংগঠনের ভূমিকা নিয়ে দলের সিনিয়র নেতারা বিএনপির প্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও পরামর্শ করেছেন। ইতোমধ্যে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ছাত্রদলের সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দলটির বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, রাজপথের আন্দোলনে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার কারণে দলটির অঙ্গ সংগঠনগুলোর পরিবর্তন করা হচ্ছে। যার অংশ হিসেবে ছাত্রদলের সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া। একইসঙ্গে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলেও বড় পদের পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছেন।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে দলীয় নেতাদের পারফরম্যান্সে হতাশ বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কৈফিয়ত চেয়েছেন শীর্ষনেতাদের কাছে।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করার আগে তারেক রহমান নিজে দলের সিনিয়র নেতাদেরসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে একটি রোড ম্যাপ করেন। এ বিষয়ে দিকনির্দেশনাও দেন তিনি। সেখানে সব নেতাই রাজপথে থাকার প্রতিজ্ঞা করেন। কিন্তু সরকার পতন আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার পর ২৮ জুলাইয়ের মহাসমাবেশ শেষে ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাব্যঞ্জক।

অবস্থান কর্মসূচিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়া কোনো সিনিয়র নেতাকে মাঠে দেখা যায়নি। সহযোগী সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মত ছিল না।  

যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকেও অবস্থান কর্মসূচির দিন নেতাকর্মীদের ফেলে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আন্দোলনের গতি ব্যাহত হয় বলে প্রশ্ন ওঠে।

২৮ জুলাই রাজধানীতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে বলা হয়, আপনারা যারা ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন কেউ যাবেন না। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একদফা আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে সহযোগিতা করবেন।

নেতাদের এমন বক্তব্যে মফস্বল থেকে আসা অনেক নেতাকর্মী সেদিনের কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং মফস্বলের অসংখ্য নেতাকর্মী ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হোন। কিন্তু সেখানে রাজধানীকেন্দ্রিক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল নগণ্য।

২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে গাফিলতির অভিযোগে ইতোমধ্যে ছাত্রদলের সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণকে। বাতিল করা হয়েছে যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি। দেওয়া হয়েছে নতুন কমিটি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে সব খতিয়ান আছে। পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে সরকার পতনের একদফা দাবিতে চূড়ান্ত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। ভবিষ্যতে যাতে এ আন্দোলনে আর কেউ গাফিলতি না করতে পারে সেজন্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান বিশ্বাস শিমুল বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কয়েক স্তরের আন্দোলন করে বর্তমানে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মাঠে নেমেছে বিএনপি। এটাই এখন চূড়ান্ত আন্দোলন। আর এই আন্দোলন বাস্তবায়নে শতভাগ চেষ্টা করতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে চূড়ান্ত আন্দোলনে রাজপথে নেমেছি। এ আন্দোলন থেকে পিছু হটার কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, এই আন্দোলনে যারা গাফিলতি করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৩
টিএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।