ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ

হীরেন পন্ডিত, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ

প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনতে জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তিকে মাসিক পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ধারাবাহিকভাবে অন্তত ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে।

এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের আলাদা গেজেট জারি করে এই পেনশন ব্যবস্থায় আনার সুযোগ বিলে রাখা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা এর বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও পেনশন স্কিমের আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে মাসিক পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিকে ধারাবাহিকভাবে অন্তত ১০ বছর কিস্তি দিতে হবে। কিস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওই ব্যক্তির যে বয়স হবে, সেই বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন।

কিস্তির হার কত হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি। এ আইনের আওতায় গঠিত সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কিস্তি দেওয়া যাবে। অগ্রিম কিস্তি দেওয়ারও সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। কিস্তিদাতার বয়স ৬০ বছর হলে তহবিলে জমানো টাকা মুনাফাসহ পেনশন হিসেবে দেওয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক। পেনশনে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি বাকি সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা টাকা মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া টাকা কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ টাকা ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা পরে ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে। নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অসচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে। সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা এই পেনশন ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।

একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য থাকবেন। তাদের নিয়োগ দেবে সরকার। ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধানও রাখা হয়েছে বিলে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থবিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বার্স অব কমার্সের সভাপতি- এর সদস্য হবেন। পর্ষদের সদস্যসচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান। বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত এক বা একাধিক তফশিলি ব্যাংক জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করবে। এ আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশের পর গঠন করা হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এর পর আগামী ১ জুলাই থেকে চালু করা হবে 'সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা' স্কিমের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। শুরুতে মডেল জেলা হিসেবে রাখা হবে ঢাকাসহ দেশের অন্য যে কোনো একটি জেলাকে। পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রমের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ দুই বছর। এর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে 'সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা' একই পদ্ধতিতে সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে। তবে শুরুর প্রক্রিয়াটি হবে সীমিত পরিসরে।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সারাদেশে চালু হওয়ার পর অন্তত পাঁচ বছর তা ঐচ্ছিক রাখা হবে। পরে ২০২৮-২০৩০ সালের মধ্যে এটি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পেলেও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সবাইকে পেনশনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি ছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য এ সুবিধা চালু করার কথাও বলেন। এরপর এজন্য আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাশ করেছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ লাখ মানুষ চাকরি করে, বাকিটা বাইরে। বিলে বলা আছে দেশের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র, দুস্থ অসহায় জনগোষ্ঠির জন্য বিলটি আনা হবে। কিন্তু আমাদের সংবিধানে ১৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে রাষ্ট্র মানুষের মৌলিক অধিকার- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা নিশ্চিত করবে। আর ১৫ (ঘ) ধারার দেশের অভাবগ্রস্ত, দুস্থ ও অসহায় মানুষ সরকারি সহায়তা পাবেন।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হলে দেশের আট কোটির বেশি মানুষ এই ব্যবস্থার আওতায় আসবেন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিজীবীরা অবসরের পর পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু দেশের সব কর্মক্ষম মানুষকে পেনশন সুবিধার আওতায় আইনে নতুন একটি আইনের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশের সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান, বেকারত্ব, ব্যাধি, পঙ্গুত্ব বা বার্ধক্যজনিত কারণে নাগরিকদের সরকারি সাহায্য দেয়া, বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই নিরাপত্তা বলয় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে এই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা তৈরি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছর। ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে দুই কোটির বেশি মানুষের বয়স হবে ৬০ এর উপরে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৫ বছরের উপরে দরিদ্র বয়স্কদের ৫০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেয় সরকার। তবে ৬৫ বছরের উপরে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ কোন ধরনের পেনশন ও বয়স্ক ভাতা কিছুই পান না। ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মত সার্বজনীন পেনশন কার্যক্রম চালু হলে ভবিষ্যতে জনগণের মধ্যে এক ধরণের নিরাপত্তাবোধ জন্ম নিবে। আজ বয়স্ক মানুষরা যেভাবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে, সেই ভাবনা তাদের মধ্যে আর থাকবে না। আর এই কারণেই শেখ হাসিনাকে জনবান্ধব রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আখ্যা প্রদান করা যেতেই পারে।

এ দেশের মানুষ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী ছিল। যেমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স য়, গবাদি পশু লালন-পালন, কৃষিজমি ক্রয়, কৃষিজমি বন্ধক গ্রহণসহ ইত্যাদি পদ্ধতিতে মানুষ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রচেষ্টা চালাত, যা ছিল দেশের সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রথাগত পন্থা। দেশে সর্বসাধারণের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য পেনশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্য পেনশন ব্যবস্থার প্রচলন আছে। চলতি অর্থবছরে ‘পেনশন ও গ্র্যাচুইটি’ খাতে সরকারের মোট ব্যয় ২৮ হাজার ২০৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪.৭ শতাংশ। দেশের ১৪ লাখ গণ-কর্মচারীদের অবসরকালীন সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্যে এ পেনশন ব্যবস্থা। রাষ্ট্র কি শুধু স্বল্পসংখ্যক সরকারি চাকরিজীবীর সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে! নাকি সব নাগরিকের সুরক্ষার বিষয় বিবেচনা করবে!

জীবনচক্রের বিভিন্ন স্তরে মানুষ নানা ঝুঁকি, অভিঘাত, বিপদ-আপদ ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়ে থাকে। ঝুঁকির মাত্রায় স্তরভেদে পার্থক্য রয়েছে। যেমন একজন ষাটোর্ধ্ব মানুষের ঝুঁকি কর্মক্ষম মানুষের ঝুঁকি থেকে চ্যালেঞ্জিং। এই সময়ে একজন ব্যক্তি ক্রমাগত ভেঙে পড়ে, কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, আয়-উপার্জন হ্রাস পায়, যত্নের অভাব, রতিশক্তি কমে যাওয়াসহ নানা  প্রতিবন্ধকতায় পতিত হয়। জীবনচক্রের শেষ ধাপ বা বার্ধক্য বয়সে প্রত্যেকের সামাজিক সুরক্ষা একান্ত আবশ্যক। সরকার ষাটোর্ধ্ব নাগরিকের সামাজিক সুরক্ষায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে, যা জাতির জন্য এক শুভ সংবাদ। জনমিতিকভাবে দেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ ভোগ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এ দেশ বয়স্ক জাতির পর্যায়ে প্রবেশের অপেক্ষায়। সমগ্র দেশে বর্তমানে প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা ১.১৩ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ। ২০২৫ সালে মোট প্রবীণের সংখ্যা হবে ২.৮০ কোটি। ২০৫০ সালে এ সংখ্যা হবে ৪.৫০ কোটি এবং ২০৬০ সালে হবে ৫.৬১ কোটি। ২০৫০ সালে দেশে প্রবীণ জনসংখ্যার হার হবে ২০ শতাংশ। দেশের বর্তমান গড় আয়ু ৭৩ বছর। এই হার ২০৫০ সালে ৮০ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৫ বছর হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। প্রবীণ সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চাহিদা নিরূপণ করতে হবে।  

দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। প্রতিটি দল পৃথকভাবে একটি বৃহৎ সামাজিক সংগঠন হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর আছে পৃথক ভাবধারা, দর্শন ও পরিকল্পনা। দলগুলো নিজ নিজ কর্মসূচি ও পরিকল্পনা জনসমক্ষে উপস্থাপন করে। গণতান্ত্রিক রীতি মতে, জনমত নিয়ে দলগুলো সরকার গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনা করে। বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি এই ইশতেহারে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি জাতির কাছে পেশ করেন। এ ধারাবাহিকতায় বয়স্কদের জন্য ব্যাপকভিত্তিক  পেনশন ব্যবস্থা চালু করার বিষয় জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সমন্বিত ‘পেনশন কার্যক্রম’ চালুর আওতায় বয়স্ক ভাতা প্রদানের পাশাপাশি ‘জাতীয় সামাজিক বীমা কর্মসূচি’ এবং ‘বেসরকারি ভলান্টারি পেনশন’ চালুর প্রস্তাবনা রাখা হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্য অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। প্রস্তাবিত আইনে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ, কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি, পেনশন গভর্নিং বোর্ড, সর্বজনীন পেনশন তহবিল ও পেনশন বিতরণ পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ থাকবে।

সরকার নাগরিক চাহিদা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। একটি জনবান্ধব সরকার রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার আলোকে নাগরিকসেবা প্রদানে সর্বদা তৎপর। সরকারের প্রতি সর্বসাধারণের আস্থা নির্ভর করে কল্যাণমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে একটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় একটি মাইলফলক। সম্পদের সুষম বণ্টন কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মূলমন্ত্র। প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিধবাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষায় সরকার ভাতা কর্মসূচি চালু করেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ হবে দেশের সর্বসাধারণের সামাজিক সুরক্ষার অনন্য উদ্যোগ।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৩
আরকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।