ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

১২ লাখের চুক্তি: প্রক্সিতে পাস, মৌখিক পরীক্ষায় ধরা পড়লেন ২ জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২২
১২ লাখের চুক্তি: প্রক্সিতে পাস, মৌখিক পরীক্ষায় ধরা পড়লেন ২ জন

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মাধ্যমে পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পড়েছেন দুই নারী পরীক্ষার্থী। একই সময় জালিয়াতির অভিযোগে আরও দুইজনকে আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে মামলা দায়েরের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করে। এর আগে গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে তাদের আটক করা হয়। তারা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে লিখিত নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

নিয়োগ জালিয়াতির আসামিরা হলেন, পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর তেলিপাড়া গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে পরীক্ষার্থী ইয়াসমিন (২১), একই উপজেলার মির্জাপুর নলপুকুরি গ্রামের লতিফুর রহমানের মেয়ে পরীক্ষার্থী মৌসুমি আক্তার (২৮),  মির্জাপুর তেলিপাড়া গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সাইদুর রহমান (২৪), ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী বড়বাড়ি গ্রামের শামসুল হকের ছেলে আসামি ইয়াসমিনের স্বামী এএসআর মাসুদ রয়েল (২৮)। এছাড়া পঞ্চগড় সদরের ধাক্কামারা এলাকার দুলালসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা পলাতক রয়েছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পরীক্ষায় আসামি ইয়াসমিন এবং মৌসুমী পঞ্চগড় সরকারি গার্লস স্কুল কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রক্সির মাধ্যমে অন্য কেউ অংশগ্রহণ করেন এবং লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন।
গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসেন ইয়াসমিন ও মৌসুমী। এ সময় তাদের পরীক্ষার প্রশ্নের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে এলোমেলো অসংলগ্ন উত্তর দেন। তখন পরিবার কল্যাণ সহকারী কর্মকর্তা ও মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয়। পরে তাদের লিখিত পরীক্ষার দিনের উত্তরপত্রের অনুরূপে সাদা পৃষ্ঠায় লিখতে দেন।

এ সময় লিখিত পরীক্ষার লেখার সাথে মৌখিক পরীক্ষায় দেওয়া লেখা কোনো মিল ছিল না। তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে কৌশলে বোর্ড প্রক্সির বিষয়টি জানতে পারে এবং অপর আসামিদের সম্পর্কে জানতে পারে। পরে আটক অপর দুইজনকে কৌশলে ডাকা হলে সত্যতা পেয়ে তাদের আটক করা হয়। সেদিনই রাতে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হেফাজতে চারজনকে তুলে দেয়া হয়।

এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক ও মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য সচিব বিপ্লব বড়ুয়া বাদী হয়ে আসামিদের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করেন।

জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইয়াসমিন শিকার করেন তার ভাই সাইদুর এবং স্বামী রয়েল তাকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করার বিষয়ে সহায়তা করেন। এদিকে সাইদুর ও রয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানান পঞ্চগড় সদর থানার ধাক্কামারা ইউনিয়নের দুলাল নামে পলাতক অপর ব্যক্তি ইয়াসমিনকে পরীক্ষা না দিয়ে প্রক্সির মাধ্যমে পাশ করে চাকরি নিয়ে দিবেন বলে ১২ লক্ষ টাকায় চুক্তি করেন। এদিকে মৌসুমির সাথেও সাইদুর, রয়েল ও দুলাল একই চুক্তি করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) রাশিদুল আলম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে আটক চারজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে চারজনকে আটকের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২২
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।