ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী মনে করে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী মনে করে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার প্রণয় কে ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

ঢাকা:  ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার প্রণয় কে ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।  

সোমবার (২১ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠককালে ভারতীয় হাইকমিশনারকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের সময় প্রণয় কে ভার্মার সফল মেয়াদ কামনা করেন ড.মোমেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেন, ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করে বাংলাদেশ। তিনি এই সম্পর্ককে 'দৃঢ় ও অনন্য' বলে অভিহিত করেন।

ড. মোমেন উল্লেখ করেন, উভয় দেশ ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বন্ধনের মাধ্যমে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গত ৫০ বছরে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছেছে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণ ও ভারত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অনুকরণীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন ড. মোমেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভিন্নভাবে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিপূরক। বাংলাদেশ একটি 'আঞ্চলিক সংযোগ কেন্দ্র' হিসাবে অবস্থান করছে এবং ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কল্পনা অনুসারে সংযোগের দৃষ্টিভঙ্গির সুবিধা পেতে পারে।

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিষয়ে ড. মোমেন এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক নিয়ম ও নিয়ম ভিত্তিক অবাধ ও ন্যায্য সংযোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতির পদক্ষেপের ফল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছে। তিনি সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনতে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।  

হাইকমিশনার বলেন, তিনি বাংলাদেশের যেখানেই যান না কেন তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশে কাজ করা একটি সম্মান ও সুবিধার বিষয়।  

দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও যোগ করেন, জি-২০ -এর বিশ্বব্যাপী আলোচনায় পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলিকে উন্নীত করতে এই বৈঠকে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ আশা করে ভারত। হাইকমিশনার প্রতিটি দেশের প্রার্থীদের সমর্থনে বহুপাক্ষিক অঙ্গনে একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী-হাইকমিশনার বহু পুরনো সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিষয়টি এখন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ও বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে ভারতের সমর্থন চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জবাবে হাইকমিশনার জানান, ভারতও এই সমস্যার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান পেতে আগ্রহী। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
টি আর/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।