ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আবারও টেলিস্কোপ তৈরি করে আলোচনায় ভোলার জাহিদ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
আবারও টেলিস্কোপ তৈরি করে আলোচনায় ভোলার জাহিদ

ভোলা: গ্রহ, নক্ষত্র ও মহাকাশের রহস্য জানার আগ্রহ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই প্রবল আগ্রহ থেকে টেলিস্কোপ তৈরি করে আলোচনায় এসেছিলেন ভোলার নাজমুল আহসান জাহিদ।

শুরুতে বাড়িতে বসেই জাহিদ চারটি টেলিস্কোপ বানিয়েছিলেন। এবার নতুন করে আরও ১১টি নিউটনিয়ান টেলিস্কোপ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি, পাচ্ছেন ব্যাপক সাড়া। এ কাজে কারো সহযোগিতা নেননি তিনি।

আগ্রহ আর উৎসাহ থেকে ভবিষ্যতে আরও আধুনিক টেলিস্কোপ তৈরি করতে চান জাহিদ। এ জন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।  

ভোলা শহরের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা নাজমুল আহসান জাহিদের গল্পের শুরুটা ২০১৭ সালের দিকের। গ্রহ-নক্ষত্র ও মহাকাশের রহস্য জানার প্রবল আগ্রহ তৈরি হয় তার। ফার্মাসিস্টের চাকরির ফাঁকে নিজেই টেলিস্কোপ তৈরির চিন্তা ভাবনা শুরু করেন।  

এ জন্য ইউটিউব, অনলাইন ঘাঁটাঘাঁটির পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন বই সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেন জাহিদ। এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে নিজের বাড়ির একটি কক্ষে শুরু করেন টেলিস্কোপ তৈরির কাজ। তখন নির্মাণ করেন চারটি টেলিস্কোপ।

অপটিক্স, আইপিস, ফাউন্ডারস্কোপ, মাউন্ট, ডফসোনিয়ান বডি মাউন্ট, অপটিক্যাল টিউব, মিরর, প্রাইমারি-সেকেন্ডারি মিরর সেলসহ নানা যন্ত্রপাতি ও উপকরণ দিয়ে মাত্র তিন মাসে টেলিস্কোপ তৈরি করে সফলতা পান জাহিদ। তার টেলিস্কোপ তৈরির সফলতা দেখতে ভিড় জমায় মানুষ।  

একাধিক গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জাহিদের টেলিস্কোপ তৈরির আগ্রহ আরও বেড়ে যায় বহুগুণে। এবার তিন মাসে তৈরি করেছেন ১১টি টেলিস্কোপ। যা দেখতে আবারও ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।

নাজমুল আহসান জাহিদ জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মহাকাশপ্রেমী মানুষ তার টেলিস্কোপ কেনার জন্য অর্ডার করেন। মুহূর্তের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায়। এ থেকে আরও উৎসাহ পেয়ে আরও উন্নত মানের ও আধুনিক প্রযুক্তির টেলিস্কোপ তৈরি করার কথা ভাবছেন জাহিদ।

তিনি আরও জানান, একেকটি টেলিস্কোপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৮ হাজার টাকায়। প্রচুর সাড়া মিলছে। এ জন্য আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে।  

তিনি বলেন, আপাতত এটি নিয়েই কাজ করছি, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে টেলিস্কোপ নির্মাণ করব। এ টেলিস্কোপের মাধ্যমে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গবেষণা করতে পারবেন, দেখতে পারবেন চাঁদ, রবি, বৃহস্পতি, শনিসহ বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র।

ছেলের এমন সফলতায় খুশি নাজমুলের পিতা মো. নুরন্নবী। তিনি বলেন, ছেলের অনেক আগ্রহ দেখছি, তার এমন সফলতায় আমি গর্বিত। সরকার যদি তাকে সহযোগিতা করে, তাহলে সে আরও এগিয়ে যাবে।

মহাকাশ সম্পর্কে আরও বেশি গবেষণার ক্ষেত্রে জাহিদের টেলিস্কোপ বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সচেতনমহল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭, নভেম্বর ২১, ২০২২
আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।