ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

খোলা বাজারের পণ্য স্বল্পতায় কষ্ট পোহাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
খোলা বাজারের পণ্য স্বল্পতায় কষ্ট পোহাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষরা

হবিগঞ্জ: হাসপাতালে স্বামীকে চিকিৎসাধীন রেখে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা কিনতে গিয়ে টানা চারদিন খালি হাতে ফিরেছেন রাবিয়া বেগম। ঘরে নেই পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য খাবার কেনার পর্যাপ্ত টাকা।

তাই প্রতিদিনই তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা তপ্ত রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন স্বল্পমূল্যে কিছু পণ্য পাওয়ার আশায়।

বুধবার (০৯ নভেম্বর) হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় ওএমএসের পণ্য কিনতে আসা রাবিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জেলা শহরের ২ নম্বর পুল এলাকার অসুস্থ ছমেদ আলীর স্ত্রী।

ঘড়ির কাটায় তখন সকাল ১১টা বেজে ৫ মিনিট। লাইনে দাঁড়ানো রাবিয়া হঠাৎ আক্ষেপের সুরে বলে উঠলেন, হগল দিনঐ আইয়্যা লাইন খাড়ই, দোগানের ধারো আইলেঐ জিনিস শেষ অইয়া জাইগ্যা। চাইর দিন খালি হাত লইয়্যা ফিরত গেছি, আজকাও ফাইমু কি না জানি না।

কথাগুলো বলার সময় রাবিয়ার চোখমুখে ভাসছিল কষ্টের ছাপ। শুধু রাবিয়া বেগমই না; মানুষের তুলনায় ডিলারের নিকট বরাদ্দ পণ্য অপ্রতুল হওয়ায় প্রতিদিনই অনেক মানুষকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

এক বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুর এলাকার লুৎফা বেগম। তিনি জানান, লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ওএমএসের পণ্য না পেয়ে দুই দিন খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাকে। বুধবার তৃতীয় দিনের চেষ্টায় দাড়িয়েঁছেন লাইনে। তার স্বামী সবজি বিক্রেতা। প্রতিদিনের আয়ে তাদের ছয় সদস্যের পরিবার চলে না। তাই প্রখর রোদেও দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এখান থেকে কিছু চাল আর আটা পেলে দুইটি দিন অন্তত তাদের ভালো যাবে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আজগর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, নিজামপুর থেকে আসতে দেরি হয়ে যায়। তাই পাঁচদিন খালি হাতে ফিরেছি। আজ যদি কিছু ভাগ্যে জুটে তাহলে তা নিয়ে বাড়ি যাবো।

ভোর ৪টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন পোদ্দার বাড়ী এলাকায় ইরাই মিয়ার স্ত্রী আফিয়া বেগম। সাত ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ৫ কেজি চাল কিনতে পেরে তিনি মহাখুশি। বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি থাকায় নিয়মিত যাতে তিনি এভাবে চাল কিনতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

শায়েস্তানগর এলাকায় ওএমএসের ডিলার নিলা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী এমজিএম সেলিম জানান, তিনি প্রতিদিন ১ টন চাল ও আটা বরাদ্দ পান। আটা নিয়মিত পাওয়া যায় না। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ মানুষ লাইনে থাকেন। এ জন্য সবাইকে দেওয়াও সম্ভব হয় না। বরাদ্দের সবটুকু পণ্য দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।