ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভাঙচুর-জনদুর্ভোগ তৈরি করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
ভাঙচুর-জনদুর্ভোগ তৈরি করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

ঢাকা: রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় না গিয়ে ভাঙচুর, জনদুর্ভোগ তৈরি করলে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যমকেন্দ্রে সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায়, এখন আমরা সেটা লক্ষ্য করছি—এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়েই মনে করে যে, নির্বাচনের মাধ্যমে পাবলিক ম্যান্ডেটে সরকার বদল হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা অনেক কিছুই দেখেছি, ষড়যন্ত্র দেখেছি। এগুলোর মাধ্যমেও ক্ষমতা বদল হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই মনে করেন সরকার বদল করবার একমাত্র উপায় হলো নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। সেজন্য সংবিধান অনুযায়ী ৫ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমেই, সেই নির্বাচনকেই আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে।

‘নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো একটু সক্রিয় হয়ে যায় কিংবা নানান ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যাতে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয় কিংবা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। নির্বাচনের সময় এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়, আমরা দেখেছি নির্বাচনের সময়ে যার যার দলের কথা, ব্যক্তিগত প্রচারণা নিয়ে অনেক সময় অনেক কিছু হয়ে থাকে। ’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন— যেকোনো দল তার কার্যক্রম করবে। তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যদি জনদুর্ভোগ তৈরি করে, রাস্তা-ঘাট আটকিয়ে দিলে... আজকে আমি দেখলাম একজন সংসদ সদস্য বলছেন, তার তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে কোনো এক জায়গায় যেতে। তিন ঘণ্টা লাগে কেন, হয় রাস্তার মধ্যে কোনো মিটিং হয় তখন কিংবা খোঁড়াখুঁড়িসহ কিছু ডেভেলপমেন্টের কাজ হয়।

‘যদি কেউ রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে কিংবা গাড়িঘোড়া ভাঙচুর করে কিংবা জনগণের দুর্ভোগ তৈরি করার জন্য তারা যদি কিছু করে তাহলে তো আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বসে থাকবে না। তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা পৃথিবীর সব দেশেই হয়ে থাকে, আমাদের বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করে, মিটিং করবে, দাবি-দাওয়ার কথা বলবে—আমাদের সরকারের কোনো রকম বাধা দেওয়ার ইচ্ছা নেই এবং আমরা বাধা দিচ্ছিও না। ’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, কোনো এক দলের নেতা বলছেন—আপনারা আসবেন, লাঠিটা নিয়ে আসবেন। লাঠিটা নিয়ে আসার সময় দেশের ফ্ল্যাগটা বেঁধে নেবেন, তাহলে কেউ কিছু বলতে পারবে না। ইনটেনশনটা কী সেখানে আপনাদের? দেখলাম পুলিশের ওপর লাঠিপেটা শুরু করেছে। আপনারা এই দৃশ্য দেখেছেন, পুলিশ পেটানোর দৃশ্য। এই সমস্ত কিছু হলে তখন তো নিরাপত্তা বাহিনী তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। আমরা সব সময় বলে আসছি, সব সময়ই বিশ্বাস করি—জনগণের ম্যান্ডেটের মাধ্যমে আসতে হবে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যদি ঘটায়, চেষ্টা করে তাহলে নিরাপত্তা বাহিনী সেটার ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, কোনো ভাঙচুর বা কিছু হয় তাহলে মামলা হবেই। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কালকে একজন বিচারপতির গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। বিচারপতি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মামলা করেছেন। এই মামলা তো হবেই। এখানে রাজনীতির গন্ধ আনা উচিত নয়। বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে যদি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় না যেয়ে তারা ভাঙচুর করে, যদি জনদুর্ভোগ তৈরি করে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।

পুরনো রাজনৈতিক মামলা সক্রিয় হচ্ছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুরনো মামলা রয়ে গেছে। এগুলো নিষ্পত্তি করতে হবে। পুরনো বলে কিছু না। পুরনো মামলা তো যুগ যুগ ধরে রাখবো না। নতুন করে কিছু হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২২
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।