ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

১৪ দিনেও সরকারি চাল পাননি উপকূলীয় জেলেরা

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
১৪ দিনেও সরকারি চাল পাননি উপকূলীয় জেলেরা

বরগুনা: সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণার ১৪ দিন পরও সরকারি বরাদ্দ মেলেনি উপকূলীয় জেলা বরগুনায় জেলেদের। এতে জেলে পরিবারগুলোর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

 

গত ৭ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবে নিষেধাজ্ঞার ১৪ দিন পার হলেও এখনও সরকারের বরাদ্দকৃত চাল পাননি উপকূলীয় বরগুনার অনেক জেলে। ফলে পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একদিকে প্রশাসনের অভিযান চলছে। অন্যদিকে জেলেরা ক্ষুধার তাড়নায় নদীতে জাল ফেলছেন। এ কারণে গত ১৩ দিনে পেটের দায়ে মৎস্য আহরণে নদীতে নেমে বহু জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।  

তাদের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক জাল এবং ইলিশ জব্দও করা হয়েছে।  

জেলেরা জানান, অন্য কোনো পেশায় সুযোগ না থাকায় অবরোধের এই সময়টায় বাধ্য হয়ে অনেক জেলে বেকার বসে আছেন। আবার কেউ কেউ নৌকা, ট্রলার এবং জাল মেরামত করছেন।

জেলার ছয় উপজেলার জেলে অধ্যুষিত এলাকাগুলো ঘুরে অনেক অভিযোগ শোনা যায়। জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনো কেন চাল পৌঁছায়নি তাদের ঘরে। ফলে অনেকেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই জাল নিয়ে নদীতে নামছেন।  

বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের নিবন্ধিত ইলিশ জেলে মো. ফারুক শরিফ ও মো. ফিরোজ। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, গতবারের নিষেধাজ্ঞার চালই এখনও পাইনি। এবারের চাল কবে পাবো জানি না। আমরা ধার-দেনায় জর্জরিত। মাছ ধরতে না পারলে দেনা পরিশোধ করবো কীভাবে? ঘরে সয়সদায় যা ছিল শেষ, এখন কী খাবো? দুই সপ্তাহ গেলেও সরকারের কাছ থেকে কিছুই পাইনি।

মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, বেতাগীতে নিবন্ধিত ইলিশ শিকারি জেলে রয়েছেন ৩ হাজার ১০০ জন। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যেন নদী থেকে ইলিশ শিকারে না যান তার জন্য প্রতিটি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে ৩ হাজার ১০০ জন জেলের ৭৭.৫ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে জেলে প্রতি ২৫ কেজি করে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে বেতাগীতে ৩ হাজার ১০০ জন জেলের জন্য ৭৭.৫ মেট্রিক টন বরাদ্দের চাল এসেছে। তবে নিষেধাজ্ঞার ১৩ দিন পার হলেও এখনও জেলেদের মাঝে সেই চাল বিতরণ করতে পারেনি মৎস অধিদপ্তর।  

মোকামিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জালাল আহমেদ বলেন, জেলেদের জন্য বরাদ্দের চালের চিঠি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমারা জেলেদের তালিকা প্রস্তুত করেছি। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চাল বিতরণ শুরু করতে পারবো।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফফার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে চালের ডিও দেওয়া হয়েছে। আমি তাদের চাল দেওয়ার জন্য বার বার বলেছি। তারা চাল বিতরণ কবে শুরু করবে আমাকে এখনও জানাননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, অবরোধের এই সময়ে জেলেরা যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে না থাকে সে জন্য প্রতি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।