ফরিদপুর: ফরিদপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনে কয়েক হাজার লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া।
সোমবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে সালথা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সালথা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তেলায়েত হোসেনের কাছে তিনি এ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সাবেক ভাইস চেয়ারমান লেবু মোল্যা, সালথা উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেন, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গট্টি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার রেজাউর রহমান চয়ন, আনোয়ার হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. খোরশেদ খাঁসহ সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
সেখানে জামাল হোসেন বলেন, আমি নৌকার বিপক্ষে নয়। আমি লাবু চৌধুরী ও তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে নির্বাচন করে এ এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রার্থী হয়েছি। আমি আওয়ামী লীগের লোক এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাজীবন আওয়ামী লীগ করে যাবো বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি নগরকান্দা-সালথার জনগণের ইচ্ছায়ই রাজনীতি করি। তাদের ভালবাসা ও সমর্থনই আমাকে এ পর্যন্ত এনেছে। আমি বরাবরই জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি এবং করতে চাই। জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনও আমার রাজনীতির একমাত্র শক্তি। আশা করি জনগণ সেটা ভোটের মাধ্যমে আমাকে বুঝিয়ে দেবেন।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমাদান উপলক্ষে প্রায় এক হাজার গাড়ির বহর নিয়ে সালথা উপজেলা থেকে বিশাল শোডাউন করে নগরকান্দার তালমায় তার নিজ বাড়িতে যান অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। তার নির্বাচনী এলাকা সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
সালথা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তেলায়েত হোসেন জানান, ফরিদপুর ২ আসনের এই নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে হবে। এ আসনের মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ৪৭৯ জন।
জানা গেছে, জামাল হোসেন মিয়া ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করেছেন। তিনি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংসদের জিএস ছিলেন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স করেছেন। বর্তমানে তিনি দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এবং জারিন কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ছাড়া তিনি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের পরিচালক, ফরিদপুর জেলা শেখ জামাল ক্রীড়া চক্রের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সদস্য, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সদস্য, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্যসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
উল্লেখ্য, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ফরিদপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ নভেম্বর। নির্বাচন কমিশন ২৬ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সভায় এ তফসিল চূড়ান্ত করা হয়।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ১০ অক্টোবর, বাছাই ১২ অক্টোবর ও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন হচ্ছে ১৯ অক্টোবর। ফরিদপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই আসনটি শূন্য হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২২
এফআর