ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাত পেরোলেই খুলছে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২২
রাত পেরোলেই  খুলছে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু

ঢাকা: রাত পোহালেই খুলে দেওয়া হচ্ছে বহুপ্রত্যাশিত নারায়ণগঞ্জের তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু।  সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

এদিকে রোববার (৯ অক্টোবর) নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সেতু পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাত বারোটার পরে জনসাধারণের জন্যে খুলছে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান সেতু।

তিনি বলেন, সেতুটি পূর্বে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জকে পশ্চিমে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এত ফলে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সাথে পদ্মা সেতুর সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।  আগে নোকায় করে নদী পথে চলাচল করতে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে সেতুটি স্থানীয়দের জন্য নিরাপদ যোগাযোগ নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া সেতুটি উদ্বোধনের পর দেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে চাঙা হবে।  

সেতু পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস।

শীতলক্ষ্যা সেতুতে নির্মিত তৃতীয় এ সেতুর মাধ্যমে নারায়নগঞ্জ মহানগর ও বন্দর উপজেলার মাধ্যমে সংযোগ তৈরি হচ্ছে।  

সেতুটি নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের  বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  

এই সেতু ১৮টি জেলাকে সংযুক্ত করেছে। সেগুলো হলো- নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও ঝিনাইদহ, খুলনা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি।

এই সেতু দিয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে পারবে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলসহ ৮ জেলার বাসিন্দারা।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ও যাত্রীরা বর্তমানে যাত্রাবাড়ী-পোস্তগোলা ব্রিজ হয়ে অথবা চাষাঢ়া-সাইনবোর্ড রুটে চট্টগ্রামে যান। এখন শীতলক্ষ্যা সেতু দিয়ে যানজট এড়িয়ে সহজে চট্টগ্রাম যেতে পারবেন।  

সেতুর প্রকল্প পরিচালক শোয়েব আহমেদ বলেন, ১ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণব্যায় ধরা হয় ৬০৮ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের ২৬৩ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা, বাকি ৩৪৫ দশমিক ২০ কোটি টাকা সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি)। ওয়াকওয়েসহ ৩৮টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। পাঁচটি নদীর ওপর দিয়ে যাওয়া সেতুটি হাঁটার পথসহ প্রস্থ ২২ দশমিক ১৫ মিটার। ছয় লেনের টোল প্লাজায় সর্বনিম্ন গুনতে হবে ৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬২৫ টাকা।

নারায়নগঞ্জের বন্দর ফরাজীকান্দার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহান বলেন, আগে এখানে গ্রামীণ সড়ক ছিল। সেতু ছিল না, নদী পার হতে হতো নৌকায় করে। এ সময় অনেকের জীবন গেছে।  

স্থানীয় বাসিন্দা সাকিব হাসান বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ নদীর ৩-৫ কিলোমিটার দূরত্ব নৌকায় পার হতে অনেক সময় লেগে যেত। এ জন্য দূরত্ব অনুযায়ী গুণতে হতো টাকাও। এ ছাড়া সড়ক পথে গেলে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরতে হতো। এখন নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের মানুষ শীতলক্ষ্যার এই সেতু দিয়ে অল্প সময়ে যাতায়াত করতে পারবে।

আব্দুর রহিম মিয়া নামের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, আগে নৌকায় করে মালামাল বহন করতে হতো। যানজট আর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ঝামেলা তো ছিলই। এসব থেকে রক্ষা পাবো এখন। এই সেতু অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্পটি ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পায়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ৯ অক্টোবর, ২০২২
এনবি/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।