ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জঙ্গিবাদ ভুল, হিজরতের বিষয়টিও মানতে পারেননি নিলয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২২
জঙ্গিবাদ ভুল, হিজরতের বিষয়টিও মানতে পারেননি নিলয়

ঢাকা: খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্য তরুণদের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন শারতাজ ইসলাম নিলয় (২২)। পরে তাকে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরে জঙ্গি মতবাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

তবে পটুয়াখালি যাওয়ার পর নিলয় বুঝতে পারেন ভুল পথে আছেন তিনি।

নিলয় বলেন, পরিবার ছেড়ে হিজরতের কথাটা যখন আসে তখন থেকে এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। যাওয়ার পর বিষয়টি বুঝতে পারি। অনেকটা বাধ্য হয়ে আমি সেখান থেকে বের হবার চেষ্টা করি। পরে সুযোগ বুঝে বাড়ি ফিরি।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

এর আগে বুধবার জঙ্গি সম্পৃক্ততায় কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৪ জনসহ মোট ৭ জনকে ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।  

নিলয় বলেন, সেখানে যাওয়ার পর সশস্ত্র প্রস্তুতির কথা বারবার শুনেছি। কিন্তু আমি সেই স্টেজ পর্যন্ত যেতে পারিনি। তার আগেই ভুল বুঝতে পেরে আমি ফিরে আসি।

জঙ্গিবাদে উদ্ধুব্ধ হয়ে এখনও যারা হিজরতের পথে রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমি ৪-৫ দিন সেখানে ছিলাম। এরমধ্যেই বুঝতে পারি এটা ভুল পথ। এ পথে পা বাড়ানোর আগে বোঝা উচিত।  

এছাড়া এ পথে যেন কেউ না যায় সেই অনুরোধ জানান নিলয়।  

এদিকে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জঙ্গি সংগঠন থেকে নিজ উদ্যোগে বাড়ি ফিরে আসা নিলয়ের জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৪ জনসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কল্যাণপুরের নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন নিলয়। পরে র‌্যাব নিলয়কে তার পরিবারের হেফাজতে রেখে বাকি নিখোঁজ ৭ সদস্য ও জড়িত অন্যান্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে।

জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় নিলয়সহ নিখোঁজ ৫ তরুণ নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমিল্লা টাউন হল এলাকায় আসে। পরবর্তীতে সোহেলের নির্দেশনায় তারা দুই ভাগ হয়ে লাকসাম রেল ক্রসিংয়ের সামনের হাউজিং স্টেট এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। নিলয়, সামি ও নিহাল একসঙ্গে রওনা হলেও ভুলবশত তারা চাঁদপুর শহর এলাকায় চলে যায়।

পরে তারা ভুল বুঝতে পেরে রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে চাঁদপুরের একটি মসজিদে অবস্থান করলে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ তাদের সন্দেহজনক আচরণের কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পরে পুলিশ তাদেরকে পাশের একটি হোটেলে রেখে যায় এবং পরদিন বাসায় চলে যেতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা রাতেই হোটেল থেকে কৌশলে পালিয়ে পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় যায়। সেখানে সোহেল ও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাদেরকে লাকসামের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে আগের থেকেই অবশিষ্ট তিনজন অবস্থান করছিল।

পরে নিলয়, নিহাল, সামি ও শিথিলকে কুমিল্লা শহরের একটি মাদরাসার মালিক নিয়ামত উল্লাহর কাছে পৌঁছে দেয় সোহেল। সেখানে নিয়ামতের তত্ত্বাবধানে একদিন থাকার পর সোহেল চারজনকে নিয়ে ঢাকায় আসেন এবং নিহাল, সামি ও শিথিলকে অজ্ঞাত ব্যক্তির নিকট বুঝিয়ে দিয়।   সেখান থকে নিলয়কে পটুয়াখালী পাঠায়। পরে পটুয়াখালীতে গ্রেফতার বনি আমিন নিলয়কে গ্রহণ করে স্থানীয় এক মাদরাসায় নিয়ে যান। সেখানে গ্রেফতার হুসাইন ও নেছার ওরফে উমায়েরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। বণি আমিন নিলয়কে ৩ দিন তার বাসায় রাখেন। তার বাসায় অতিথি আসায় পরবর্তীতে নিলয়কে হুসাইনের মাদরাসায় রেখে আসেন।  সেখান থেকেই নিলয় পালিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন।

আরও পড়ুন: জঙ্গি সম্পৃক্ততায় ঘর ছেড়ে যাওয়া ৭ জন গ্রেফতার

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এমএমআই/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।