ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে তরুণীর আত্মহত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে তরুণীর আত্মহত্যা প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুর: ফোনে বিয়ে হওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী এক যুবককে ভিডিও কলে রেখে পান্না আক্তার (১৯) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতের কোনো সময় তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

পরে শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দেনায়েতপুর গ্রামের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পান্না রায়পুর উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের পূর্ব চরপাতা গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল হামিদের মেয়ে। তিনি একটি পরিবারের গৃহকর্মীর হিসেবে ছিলেন।  

জানা গেছে, ফোনে বিয়ে করা তার কথিত স্বামী ইসরাফিল হোসেনের বাড়ি যশোর জেলায়। বর্তমানে তিনি প্রবাসে আছেন।  

এ ঘটনায় পান্নার ভাই মো. রিপন রায়পুর থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ পান্নার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি জব্দ করেছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।  

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রায়পুর পৌরসভার দক্ষিণ দেনায়েতপুর গ্রামে আমিন ম্যানশন নামে একটি পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া মো. নুরুল আমিনের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে পান্না কাজ করতেন। যশোর জেলার বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী ইসরাফিল হোসেনের সঙ্গে তার ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফোনেই তাদের বিয়ে হয়।

গত ২৩ আগস্ট যশোর থেকে ইসরাফিলের বাবা এবং এক আত্মীয় পান্নাকে দেখতে তাদের বাড়িতে আসেন। তারা ফিরে যাওয়ার তিনদিন পর শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে পান্না তার গৃহকর্তার বাসার একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে স্বামী ইসরাফিলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে স্বামীকে ভিডিও কলে রেখেই তিনি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পান্নার গৃহকর্তা নুরুল আমিনের ছেলে সারোয়ার আমিন বাংলানিউজকে বলেন, পান্না প্রায় এক বছর আগে আমাদের বাসায় কাজ নেয়। সে আমাদের এখানেই থাকতো। মাঝে মধ্যে তাদের বাড়িতে যেত। তার সঙ্গে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পারি। তবে বিষয়টি আমরা বিস্তারিত জানতাম না। ২৩ আগস্ট সে ছুটি নিয়ে বাড়িতে যায়। ওই সময় তাকে নাকি দেখতে আসে এবং বিয়ের বিষয়ে কথাবার্তা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সে আমাদের বাড়িতে ফিরে আসে। রাতে তার প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করে। সকালে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেই। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।  

পান্নার স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, যে ছেলের সঙ্গে পান্নার সম্পর্ক ছিল ওই ছেলের বাবা এসে তাদের পারিবারিক অবস্থা দেখে হয়তো সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এতে অভিমান করে সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।  

পান্না আক্তারের ভাই রিপন বলেন, প্রবাসী ইসরাফিলের সঙ্গে ফোনে আমার বোনের বিয়ে হয়। ইসরাফিলের বাবা আমার বোনকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি ফিরে গিয়ে হয়তো পান্নাকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। এ জন্য তিনি অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এক প্রবাসী ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এসআরএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।