ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেলওয়ে জাদুঘর এখন ফরিদপুরে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেলওয়ে জাদুঘর এখন ফরিদপুরে

ফরিদপুর: গোপালগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে উদ্বোধন হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর কয়েকটি জেলা ঘুরে এখন ফরিদপুরে।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে ফরিদপুরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এ রেলওয়ে জাদুঘরটি।

এটি আগামীকাল শনিবার (২০ আগস্ট) রাত ৯টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ফরিদপুর রেলস্টেশনে রাখা এ ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। যে কেউ বিনামূল্যে জাদুঘরটি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
 

এর আগে চলতি মাসের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে এ ব্রডগেজ রেলওয়ে জাদুঘরটির প্রদর্শনের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি।

পরে এটি গোপালগঞ্জ, একই জেলার ভাটিয়াপাড়া রেলস্টেশন, ফরিদপুরের মধুখালী ও রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এখন ফরিদপুর শহরের রেলস্টেশনে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।  

জাদুঘর প্রদর্শনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হুমায়ূন কবির বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে মুজিব জন্ম শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানান দিতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর থেকেই বিভিন্ন বয়সের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর দেখতে স্টেশনটিতে ভিড় করছেন। তাদের পদচারণায় স্টেশন মুখরিত হয়ে উঠেছে।

হুমায়ূন কবির বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভিড় থাকছে। আগামীকাল শনিবার (২০ আগস্ট) রাত ৯টা পর্যন্ত এখানে এর প্রদর্শনী চলবে। তারপর রেলের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি প্রদর্শন করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের খালাসী মো. সেলিম রেজা বাংলানিউজকে বলেন, এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে ডিসপ্লের পাশাপাশি শ্রবণযন্ত্রের মাধ্যমে তৎকালীন প্রেক্ষাপটের ধারা বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও চিত্রের সঙ্গে ধারা বর্ণনা শুনে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারছে।

“জাদুঘরে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ি, সমাধিসৌধ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণ, বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত প্রতীকী চশমা, মুজিবকোট, পাইপ, মুজিব নগর স্মৃতিসৌধ, জাতীয় শহীদ মিনার, কারাগারের রোজনামচা, বিজয়স্তম্ভ কমলাপুর ও মুজিব শতবর্ষের লোগো প্রদর্শন করা হচ্ছে। ”

নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতেই রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী এ পরিকল্পনা করেন বলে জানান সেলিম রেজা।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে বিষয়বস্তুটি পৌঁছে দিতেই তিনি এ উদ্যোগ নেন। গোপালগঞ্জ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর যাত্রা শুরু করেছে।

ফরিদপুর শহরের আলীপুর থেকে জাদুঘরটি দেখতে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, “১৯২০ সালে বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণের পর বাবা-মায়ের কাছে ছিলেন প্রিয় খোকা। তারপর তিনি আমাদের কাছে ছিলেন মুজিব ভাই। ১৯৬৯ এর গণ-আন্দোলনের পর তিনি হন বঙ্গবন্ধু। দেশ স্বাধীনের পর তিনি আমাদের জাতির পিতা। এসব প্রেক্ষাপট ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে যথার্থভাবেই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে। রেলে একটি বগির মধ্যে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর করে বঙ্গবন্ধুকে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি আমার কাছে ভালো লেগেছে। ”

যাদুঘর দেখার অনুভূতি জানাতে গিয়ে আমিনুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, “যাদুঘরের বাইরের অংশে ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর ৬ দফা, ৬৯-এর গণ-আন্দোলন, ৭০-এর নির্বাচন ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার, যুদ্ধকালীন দিন ও ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের চিত্র প্রস্ফুটিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে পেরে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারছি। রেলওয়ে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করায় তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

শহরের ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাইসা বলেন, “পাঠ্য বইতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পড়েছি। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে এসে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানতে পেরেছি। তার ত্যাগ, সাহস ও প্রতিবাদের ভাষা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।