ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সারাদেশের ২৩২ চা বাগানে শ্রমিকদের কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
সারাদেশের ২৩২ চা বাগানে শ্রমিকদের কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত

মৌলভীবাজার: ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কয়েকদিন ধরে লাগাতার দুই ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন সারাদেশের চা শ্রমিকরা। কিন্তু তাতেও চা বাগানের মালিক পক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে সারাদেশের ২৩২টি চা বাগানের শ্রমিকরা দিনব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করেন।

শনিবার (১৩ আগস্ট) মৌলভীবাজার জেলার চা বাগানগুলোতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শ্রমিকদের নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, অনতিদূরে স্লোগানসহকারে মিছিল, নিজ হাতে লিখিত নানান আকৃতির ফেস্টুনে দাবি তুলে ধরে প্রদর্শন ইত্যাদি।  

এর আগে চা বাগানের সব কাজ বন্ধ করে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তাঘাটে অবস্থান নেওয়ার জন্য প্রতিটি চা বাগানের শ্রমিকদের আহ্বান করেছেন তারা।

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকদের দিনব্যাপী কর্মবিরতি চলাকালে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, শনিবার (১৩ আগস্ট) কর্মবিরতির ৪র্থ দিন। আজ আমাদের চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধি কর্তৃক নির্বাচিত সিলেট-চট্রগ্রামসহ দেশের ২৩২টি চা বাগানে একযোগে দিনব্যাপী ধর্মঘট পালিত হয়েছে। আমাদের এক দাবি-দৈনিক বেতন বৃদ্ধি। ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০টাকায় উন্নিত করতে হবে।

আমরা বিভিন্ন চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। প্রতিটি চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের নায্য অধিকার আদায়ে ফুঁসে উঠেছে। এই দাসত্ব জীবনে তাদের অনেক কষ্ট মালিক পক্ষের থেকে আমরা মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে কোন আশ্বাস পাইনি বলে তিনি জানান।

বিজয় হাজরা বলেন, দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব বাগানে কাজ বন্ধ থাকবে। কাছাকাছি বাগানগুলো একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামবে। প্রয়োজনে সড়ক অবরোধ করা হবে। মালিক পক্ষের টালবাহানা আর আমরা মানবো না। এখন শ্রমিকদের আন্দোলন কেউ ঠেকাতে পারবেনা।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাদক্ষ ও শ্রমিকনেতা পরেশ কলেন্দি বাংলানিউজকে বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবীতে আমরা ৪ দিন ধরে দুইঘন্টা করে কর্মবিরতি করে আসছি। মালিক পক্ষ থেকে কোন সারা আসেনি, তাদের টনক নড়েনি। দুই ঘন্টা কর্মবিরতি শেষে প্রতিদিনই শ্রমিকরা বাগানের সব কাজ করছেন। চা বাগানের ভরা মৌসুমে বাড়তি সময় দিয়ে পাতা তুলছেন, যেন আন্দোলনের ফলে চা শিল্পের কোন ক্ষতি না হয়। এটা চা বাগানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা। কিন্তু মালিকপক্ষ যদি মনে করে এই ভালোবাসা আমাদের দুর্বলতা, তাহলে তারা ভুল করবে। স্থায়ী সমাধান না পেলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো।

পরেশ আরো বলেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা দেয়ার জন্য আমরা দুই বছর আগ থেকে দাবী জানিয়ে আসছি। কিন্তু ১৯ মাস গত হয়ে গেলেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী না গিয়ে মালিক পক্ষ মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে গড়িমসি করছে। তারা মাত্র ১৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধগতির বাজারে মাত্র ১৪ টাকা দিয়ে চা শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা,আগস্ট ১৪, ২০২২
বিবিবি/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।