ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মেঘনার জোয়ারে ভেঙেছে রাস্তা, তলিয়ে গেছে পুকুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
মেঘনার জোয়ারে ভেঙেছে রাস্তা, তলিয়ে গেছে পুকুর

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর সৃষ্ট অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে উপকূল সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের জোয়ারের পানির চাইতে শনিবারের (১৩ আগস্ট) জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল অনেক বেশি।

 

স্থানীয়রা জানান, স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন ফুটের বেশি পানি উপকূলে ঢুকে পড়েছে। এতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের পুকুর, ফসলি জমি। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। আর নদীতে তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় উপকূল জুড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।  

তারা জানায়, মেঘনা নদীর উপকূলীয় জেলার কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার প্রায় ৩৭ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার সময় মেঘনার সৃষ্ট জোয়ারের পানি অতি সহজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এছাড়া সদরের চররমনী মোহন এবং রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ও উত্তর চর বংশী এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে।  

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের চর আলী হাসান গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, জোয়ারের পানির তোড়ে তাদের এলাকার মনপুরা ব্রিজ-চেয়ারম্যান বাড়ি সড়ক ভেঙে গেছে। এতে ভাঙা রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত পানি ঢুকে পুকুর তলিয়ে গেছে। তাদের এলাকায় আনোয়ার হোসেন, রৌশন আলীসহ বেশ কয়েকজনের পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে।  

একই এলাকার মান্নান ফরদান বলেন, জোয়ারের পানি তার পুকুরে ঢুকে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

মধ্যম চর রমনী মোহন গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন থেকে জোয়ারের পানিতে তাদের বসতভিটা তলিয়ে যায়। তবে শনিবারের পানির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। এতে বসতঘরেও পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় তাদের।  

মেঘনা নদীবেষ্টিত চর মেঘাতে থাকা শিউলি নামে এক স্কুলছাত্রী বলেন, চরটির চারপাশে নদী হওয়ায় খুব দ্রুত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে পুরো চর জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। বিকেল ৪টার দিকে পানি উঠতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে পানি নামতে শুরু করে।  

কমলনগর উপজেলা চরমার্টিন এলাকার বাসিন্দা তরুণ সংবাদকর্মী আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত চারদিন থেকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকতেছে। অতিরিক্ত পানির তোড়ে তোরাবগঞ্জ টু মতিরহাট সড়কের কালভার্ট এলাকায় সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এতে সিএনজি অটোরিকশাসহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।  

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার জোয়ারে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এখন পূর্ণিমা এবং বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি উপকূলে উঠে পড়েছে। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।