ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঘুষের টাকা ফেরত পেতে মরদেহ নিয়ে সভাপতির বাড়িতে অবস্থান!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
ঘুষের টাকা ফেরত পেতে মরদেহ নিয়ে সভাপতির বাড়িতে অবস্থান!

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে ছেলেকে মাদরাসায় চাকরি দেওয়ার নামে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধানপাড়া দারুলফালা দাখিল মাদরাসার সাবেক সভাপতি জুলফিকার আলী প্রধানের বিরুদ্ধে।  

এদিকে ছেলের চাকরি না হওয়ায় স্ট্রোক করে দবিরুল ইসলাম (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর টাকা ফেরত চেয়ে তার মরদেহ নিয়ে সেই সাবেক সভাপতির বাড়িতে অবস্থান নেয় নিহতের পরিবারসহ স্থানীয়রা।

 

একপর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গভীর রাতে উভয় পরিবার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানে নিয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) গভীর রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

জানা গেছে, চাকরির জন্য দেওয়া ১২ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অভিনব এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন নিহতের পরিবার। পরে আলোচনায় সভাপতি ৬ লাখ টাকা দিতে চাইলে উভয় পরিবার সমঝোতায় আসে। রাতেই এক লাখ টাকা পেয়ে স্ট্যাম্পে এক মাস সময় চেয়ে বাকি ৫ লাখ টাকা দিতে চাইলে মরদেহ সরিয়ে নেয় নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয় ও মৃতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, ২ বছর আগে জুলফিকার প্রধানপাড়া দারুলফালা দাখিল মাদরাসায় সভাপতি থাকা অবস্থায় দবিরুলের ছেলে আব্দুস সবুরকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা চান। এদিকে দবিরুল জমি, গরু-ছাগল বিক্রি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অংকের টাকা মিলিয়ে তাকে ১২ লাখ টাকা দেন চাকরির জন্য। কিন্তু এর মাঝে তার সভাপতির মেয়াদ অতিক্রম হয়ে যায়। অন্যদিকে সব কিছু বিক্রির পরেও ছেলের চাকরি না হওয়ায় শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন দবিরুল। অসুস্থতার মাঝে পরিবারের চাহিদা মিটাতে না পেরে এবং চাকরির জন্য দেওয়া ১২ লাখ টাকা ফেরত না পেয়ে বিভিন্ন চিন্তায় গত মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) স্ট্রোক করেন দবিরুল। পরে পরিবারের লোকেরা তাকে রংপুরে নিলে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। সেখান থেকে সন্ধ্যায় ছাড়পত্র নিয়ে গ্রামে ফিরে চাকরির জন্য দেওয়া ১২ লাখ টাকা ফেরতের দাবি তুলে স্থানীয়দের সহায়তায় সাবেক সভাপতির বাড়িতে মরদেহ রেখে দেওয়া হয়।  

সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, উভয় পক্ষ গভীর রাতে সমঝোতায় আসার পরে মরদেহ সরিয়ে নেয় পরিবারের লোকজন। পরে শুক্রবার (১২) সকালে মরদেহ দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।