ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চিকিৎসক স্ত্রীকে খুন করতেই ব্যাগে করে ধারালো অস্ত্র নেন রেজা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
চিকিৎসক স্ত্রীকে খুন করতেই ব্যাগে করে ধারালো অস্ত্র নেন রেজা

ঢাকা: হোটেলে ওঠার পর জান্নাতুল নাইম সিদ্দিকার (২৭) সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয় রেজাউল করিম রেজার (৩১)। এ সময় রেজা তার ব্যাগ থেকে ধারালো ছুরি বের করে ভিকটিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

আলোচিত হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনার পর র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার একটি মেস থেকে রেজাকে আটক করা হয়।

তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজধানীর পান্থপথে একটি আবাসিক হোটেল থেকে সিদ্দিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাতক রেজাকে আটকের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন জানান, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের সঙ্গে রেজার পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা পরিবারকে না জানিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন। এরপর তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন।

ভিকটিমের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীন রেজার একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এই বিষয়টি সিদ্দিকা জানতে পারলে বিভিন্ন সময়ে কাউন্সেলিং করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডাও হয়।

একপর্যায়ে রেজা তার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ভিকটিমকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। রেজা ১০ আগস্ট ভিকটিমকে তার জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে পান্থপথের ‘ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট’ হোটেল নিয়ে যায়। ভিকটিমের জন্মদিন ছিল ১২ আগস্ট, এদিন জমকালোভাবে তার জন্মদিন পালনের কথা বলে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন রেজা।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, সিদ্দিকাকে হত্যার পর সে গোসল করে ভিকটিমের মোবাইল সঙ্গে নিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে করে চট্টগ্রামে গিয়ে মুরাদপুরে এক আত্মীয়ের সঙ্গে একটি মেসে আত্মগোপন করেন।

গ্রেফতার রেজা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। এমবিএ চলাকালে সে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে জুন মাসে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগদান করেন।

বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রেজার সঙ্গে পান্থপথে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামে আবাসিক হোটেলে ওঠেন সিদ্দিকা। তারা হোটেলটির ৩০৫ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সেখানেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পরে সেই রুম থেকে সিদ্দিকার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন:

একাধিক সম্পর্কের দ্বন্দ্বে হোটেলে নারী চিকিৎসককে হত্যা
চিকিৎসক হত্যা, একসঙ্গে হোটেলে ওঠা সেই যুবক গ্রেফতার 
হত্যার শিকার চিকিৎসকের শরীরে অসংখ্য কাটা দাগ

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
পিএম/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।