ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঁধ ভেঙে যমুনায় বিলীন শতাধিক ঘরবাড়ি

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
বাঁধ ভেঙে যমুনায় বিলীন শতাধিক ঘরবাড়ি

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কৈজুরী-বিনোটিয়া যমুনার তীর রক্ষা বাঁধটিতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।

বিলীন হয়েছে নদী তীরবর্তী শতাধিক ঘরবাড়ি।

বুধবার (১০ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, কৈজুরী-বিনোটিয়া বাঁধটির বিনোটিয়া ও মাজ্জান অংশে দফায় দফায় ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষগুলো চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। এদিকে ভেঙে যাওয়া বাঁধটির পশ্চিমে ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অপর একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে।

সরেজমিনে গত দু’মাস আগে বন্যার শুরুতে যমুনার পানির প্রচণ্ড স্রোতে কৈজুরী বাধের জেলার সর্ব দক্ষিণের গ্রাম বিনোটিয়ায় ৭০ মিটারজুড়ে ধসে যায়। পরে মাজ্জান অংশ মিলে বাঁধের বিলীন হয় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা। বাঁধ ধসের সঙ্গে-সঙ্গে তীরবর্তী ঘরবাড়ি ও জমিগুলো মুহূর্তেই ধসে যায়। এতে শ’ খানেক পরিবার সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে আশ্রয় নেন পাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।



বিনোটিয়া গ্রামের আব্দুল বাতেন, ইসমাইল হোসেন, রূপচাঁদ মোল্লা, মধুমালা, রুজিনা পারভিন, দুলু খাতুন, শরবানু ও এরশাদ মোল্লাসহ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া অনেকেই বলেন, বর্ষার শুরুতেই এখানে নদীভাঙন দেখা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিরাজগঞ্জ সময় মতো ব্যবস্থা না নেওয়ার গত দুই মাসে এক কিলোমিটার বাঁধ ধসে আমাদের শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।  

এদিকে ভাঙন অব্যাহত থাকায় পাশে থাকা তিন বছর আগে ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধও হুমকিতে পড়েছে। বর্তমানে ভাঙন এলাকা থেকে বাধটি মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থান করছে। এতে এলাকাবাসী চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিনোটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ চৌধুরী ও

বিনোটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল খালেক জানান, বাধ ধসে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় আমরা আশপাশের ৭-৮ গ্রামের মানুষ খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।



স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. এরশাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে মধ্যে শ’ খানেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এলাকার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা, হাট-বাজারসহ হাজারো ঘরবাড়িসহ তিন বছর আগে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটিও হুমকিতে পড়েছে।

গালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, বাঁধের কাছ থেকেই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবোকে এ বিষয়ে অবগত করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আর মাত্র ২০ মিটার দূরে রয়েছে নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এটি ভাঙলে কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়বে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে জানানোর পর সঙ্গে সঙ্গে পাউবোর্ডকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। ইতোমধ্যেই তারা জিও ব্যাগ (বালি ভর্তি বিশেষ বস্তা) ফেলতে শুরু করেছে।

পাউবো সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে ওই এলাকার ৬০০ মিটারে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। নতুন প্রকল্পের কাজের টেন্ডার হয়েছে। যা বাস্তবায়িত হলে এ এলাকা ভাঙন মুক্ত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।