ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কিশোরীকে ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করছিল তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
কিশোরীকে ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করছিল তারা দুই পাচারকারী

নারায়ণগঞ্জ: প্রেমের ফাঁদে ফেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে এক কিশোরীকে (১৫) ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কিশোরীকে ঝিনাইদাহের বর্ডার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

পাশাপাশি দুই পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বুধবার (১০ আগস্ট) পাচারকারীদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানালে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দিনগত রাতে উদ্ধার হওয়া কিশোরীসহ আটকদের গ্রেফতার করে ফতুলা থানায় নিয়ে আসা হয়।

এর আগে, সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধারসহ দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। রোববার (৭ আগস্ট) রাতে ওই কিশোরীর বাবা সোহেল বাদী হয়ে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

গ্রেফতার দুই পাচারকারী হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার ভীটু হোগলা কান্দির মোক্তার হোসেনের ছেলে হাসান (১৮) ও চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার গোয়ালঘরের শাহজাহানের পুত্র শামিম ওরফে রাকিব (১৮)। তারা উভয়েই উদ্ধার হওয়া কিশোরীর প্রেমিক রনির সহোযোগী। আর উদ্ধার হওয়া কিশোরী দক্ষিণ সস্তাপুর এলকার এবলুম গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

ওই কিশোরী জানায়, সে গত এক বছর ধরে এবলুম গার্মেন্টসে চাকরি করছে। অপরদিকে রনি ছয় মাস পূর্বে চাকরিতে যোগদান করেন এবং সস্তাপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। উভয়ে একই গার্মেন্টেসে চাকরি করার সুবাদে রনির সঙ্গে পাঁচ মাস পূর্বে তার (কিশোরী) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের পরিকল্পনা থাকে গার্মেন্টস থেকে বেতন পেয়ে তারা পালিয়ে যাবে। রনি তখন কিশোরীকে জানায় তার বন্ধু হাসান তাকে গার্মেন্টসের সামনে থেকে নিয়ে যাবে। সে মোতাবেক ৭ আগস্ট রাতে বেতন পেয়ে কিশোরী গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে হাসানের সঙ্গে রিকশায় করে রনির নিকট যাওয়ার জন্য রওনা দেয়।

অতঃপর রিকশা ছেড়ে সিএনজি নেয় তারা। পথিমধ্যে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় শামিম ওরফে রাকিব নামক হাসানের পরিচিত এক সহোযোগী। তারা তখন বাসে চড়ে চলে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়। সেখানে তারা দুপুর দুইটার দিকে বিজিবির হাতে আটক হয়। আটক হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সে (কিশোরী) বুঝতে পারেনি তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে রনি মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনেয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, মেয়েটি কথিত প্রেমিক রনির কথায় বিশ্বাস করে ৭ আগস্ট গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী হাসানের সঙ্গে দেখা করে। হাসান তখন নিয়ে যায় শামিম ওরফে রাকিবের নিকট। সেখান থেকে তারা বাসে করে যায় বর্ডার এলাকায়। তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে ৮ আগস্ট তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে থানা পুলিশকে জানালে তারা কিশোরীসহ পাচারাকারী হাসান ও শামিম ওরফে রাকিবকে মঙ্গলবার দিনগত রাতে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, কিশোরীর কথিত প্রেমিক মূল হোতা রনিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, মেয়েটিকে পাচারের উদ্দশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিজিবি সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধারসহ পাচারকারী চক্রের দু’সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
এমআরপি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।