ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোর জেলা পরিষদে কাজ না করেই ঠিকাদারের টাকা উত্তোলন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
নাটোর জেলা পরিষদে কাজ না করেই ঠিকাদারের টাকা উত্তোলন! অভিযুক্ত ঠিকাদার ও ডাস্টবিন।

নাটোর: নাটোর জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত এক লাখ টাকায় ডাস্টবিনের নির্মাণকাজ না করেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সমুদয় বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ঠিকাদার পুরোনো একটি ডাস্টবিন মেরামতের মাধ্যমে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

পরে স্থানীয় লোকজনের তোপের মুখে কাজ বন্ধ করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন নায়মুল সরকার বিলাশ নামে ওই ঠিকাদার।

সোমবার (০৮ আগস্ট) নাটোর শহরের হুগোলবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

নাটোর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রানা হোসেন বাংলানিউজকে জানান, জেলা পরিষদ থেকে শহরের হুগোলবাড়িয়া এলাকায় একটি ডাস্টবিন নির্মাণের জন্য ২০২০-২১ অর্থ বছরে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়নি। উপরোন্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার গত মে মাসে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে সমুদয় বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন। সম্প্রতি নির্ধারিত ওই ডাস্টবিনের অস্তিত্ব না মেলায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তুমুল হৈচৈ পড়ে যায়। পাশাপাশি ডাস্টবিন নির্মাণের দাবি ওঠে।

এ অবস্থায় ঠিকাদার নায়মুল সরকার বিলাশ সোমবার থেকে তড়িঘরি করে শহরের হুগোলবাড়িয়া এলাকায় নাটোর পৌরসভা নির্মিত পুরোনো ডাস্টবিনে টাইলস লাগানো কাজ শুরু করেন। এতে স্থানীয়রা বুঝতে পেরে ওই কাজে বাধা দেন। একই সঙ্গে তারা নতুন ডাস্টবিন নির্মাণে বরাদ্দকৃত টাকায় কাজ না করে পুরোনো কাজে টাইলস বসাচ্ছেন কেন ঠিকাদারকে এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এসময় পরিস্থিতি বুঝতে পেরে স্থানীয়দের রোষানল থেকে বাঁচতে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন ওই ঠিকাদার।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল হামিদ বাংলানিউজকে জানান, নতুন করে ডাস্টবিন নির্মাণ না করেই ওই ঠিকাদার বিল উত্তোলন করেছেন বলে তারা জেনেছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে চাপাচাপি শুরু হলে ওই ঠিকাদার নতুন কাজ না করে পুরোনো একটি ডাস্টবিন সংস্কার করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।  

তিনি বলেন, পুরোনো ডাস্টবিনে পাঁচ/ছয় হাজার টাকার টাইলস কিনে এনে বসাচ্ছিলেন, কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তা খসে পড়ছিল। এ নিয়ে প্রতিবাদ করে কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয় লোকজন। ঠিকাদারও পরিস্থিতি অনুমান করে সেখান থেকে সটকে পড়েন। এটা ছিল তার সম্পূর্ণ ভাওতাবাজি।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নায়মুল সরকার বিলাশের সঙ্গে কথা বলতে একাধিক বার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি বাংলানিউজকে জানান, পৌর এলাকায় কোনো উন্নয়ন কাজ করতে হলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। সেক্ষেত্রে কেউ এ ব্যাপারে কোনো অনুমতি নেয়নি। আর কাজ না করেই টাকা উত্তোলন করার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। অনিয়মকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দারকার বলে তিনি দাবি করেন।

নাটোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মো. সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। অনিয়ম বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ