ঢাকা: সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’, ‘ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশ’ এবং ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে (খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট) জনজীবনে সঙ্কট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেখানকার বেড়িবাঁধ। ফলে স্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ জনপদ প্রাণিত হচ্ছে।
বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক হলেও উপকূলের প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। মন্ত্রী পরিষদ খুলনা-সাতক্ষীরাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করলেও প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হয় না।
বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। উপকূলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, চলতি জুলাই মাসে জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে উপকূলের অনেক অঞ্চল লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই সময়ে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল ও চট্টগ্রামের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ নানান ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং সহস্রাধিক পরিবার বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকাকে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানান মোহন কুমার মণ্ডল।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে উপকূলে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ, জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, সুন্দরবনসহ আশপাশের এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা, টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মণ্ডল, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা ‘স্কাস’-এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, শহীদ আলীম সাহিত্য সংসদের সানজিদুল হাসান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এনবি/এসএ