ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরে ছুটছেন জেলেরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরে ছুটছেন জেলেরা

বাগেরহাট: জীবনের ঝুঁকি ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মাছ শিকারে সাগরে ছুটছেন বাগেরহাটের জেলেরা। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার (২৩ জুলাই) ভোর থেকে সাগরের উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করেছেন তারা।

বাগেরহাট শহরের কেবি বাজার, কচুয়ার বগা, শরণখোলার রায়েন্দা, রামপাল ও মোংলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩২ ট্রলার যোগে জেলেরা রওনা দিয়েছেন। সরকারি হিসেবে অন্তত ১৩ হাজার জেলের বাগেরহাট জেলা থেকে মাছ শিকারে সাগরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সাগরে যাওয়া জেলেদের জীবনের ঝুঁকিসহ রয়েছে নানা শঙ্কা।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বগা এলাকার জেলে রহিম উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার পেশা হিসেবে সাগরে মাছ ধরে সংসার চালাই। এবছরও যাচ্ছি, এভাবেই জীবন কেটে যায় আমাদের।

একই এলাকার জেলে ওসমান শিকদার বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে ৬৫ দিন সাগরে যেতে পারিনি। সেই নিষেধাজ্ঞা শনিবার শেষ হচ্ছে, এখন যাচ্ছি। আশাকরি এবার মাছ ভালই পাব।

রামপাল উপজেলার হুড়কা এলাকার ছগির উদ্দিন বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় খুব কষ্টে দিন কাটে আমাদের। ধার-দেনা করে পেট চালাতে হয়। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার সময় জালসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রস্তুতের জন্যও টাকা ধার করতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরে লোকালয়ে এনে বিক্রি করতে হয় কম দামে।

শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী এলাকার রশীদ মোল্লা বলেন, ঝড়-জলচ্ছাসসহ নানা দুর্যোগের পাশাপাশি ভয়ঙ্কর সব প্রাণীর ভয় মাথায় নিয়ে সাগরে মাছ ধরি আমরা। কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কখনো পরিবর্তন হয় না। আর সরকারি সহযোগিতাও সব জেলে পায় না। নিষেধাজ্ঞার সময়, সরকারি সহযোগিতা আরও বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। শুধু রশীদ মোল্লা নয়, জেলার বেশির ভাগ জেলেই সরকারি সহযোগিতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। প্রকৃত জেলেদের জাল ও নৌকা তৈরির জন্য সরকারিভাবে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার ভোর থেকে জেলেরা সাগরে রওনা হয়েছেন। এবার সব মিলিয়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার জেলে সাগরে যাচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ভাল মাছ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর গত ১৯ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এরই মধ্যে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের উপকূলে মাছধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। সেই হিসেবে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরলেও, সুন্দরবনের উপকূলে প্রবেশ করতে আরও এক মাস ৮ দিন অপেক্ষা করতে হবে জেলেদের। বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় মোট ৩৯ হাজার ৬১৭টি জেলে পরিবার রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে ৬ হাজার জেলেকে দুই ধাপে মোট ৭০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশ  সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।