ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেশের স্বাস্থ্যসেবা অনেক দূর এগিয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২২
দেশের স্বাস্থ্যসেবা অনেক দূর এগিয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য বিভাগ খাতের বরাদ্দের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি, আমরা ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি; বাংলাদেশ আজকে এশিয়াতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে এবং বিশ্বে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল প্রস্তুত ছিল না, লকডাউনের মধ্যেও হাসপাতাল তৈরি করেছি। ১২০ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যেই ১৫ হাজার নতুন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, ২০ হাজার নতুন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র ল্যাব ছিল। এখন বাংলাদেশে সাড়ে ৮০০ ল্যাব আছে। এভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। করোনার তিন ঢেউ গেলো বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যায়নি, বিনা অক্সিজেনে কেউ মারা যায়নি। ভ্যাকসিনে আমরা প্রথম দেশ এই রিজিয়নে যারা ভ্যাকসিন পেয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছি। ২৮ কোটি বার লোকের সুই ফোটাতে হয়েছে এবং একটি কেসেও কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু এই বিষয়গুলোকেও আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওষুধশিল্প বিশ্বমানের। সারা বাংলাদেশে ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি হয়। আমাদের বর্তমানে ৬০ হাজার সিট রয়েছে। বিএনপির সময় ছিল ২০ হাজার সিট। মেডিক্যাল কলেজের সিট ১১ হাজার এখন, বিএনপির সময় ছিল ২ হাজার সিট। নার্সিয়ে সিট আছে ৩৪ হাজার। আর বিএনপির সময় ছিল ৪ হাজার। আমাদের দেশে ১৭ কোটি লোক, ১৭ কোটি লোককেই চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনার সময় কেউ বিদেশে যেতে পারেননি, বাংলাাদেশেই চিকিৎসা নিয়েছেন। কিছু বাইরে যায়, তাদের তো ধরে রাখতে পারবো না। যত ভালো সেবাই হোক তারা এখানে নেবে না; তারা আমেরিকা-ইউরোপে যাবে, সিঙ্গাপুর যাবে—এটা স্বাভাবিক। আমেরিকা থেকেও আবার এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। আমাদের অনেক লোকই আছে যারা বাইরে চিকিৎসা না নিয়ে এখানে আসে চিকিৎসা নিতে। দাঁতের চিকিৎসা, পেটের চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশে আসে অনেক বাঙালির সাথে আমার এ বিষয়ে কথা হয়।

তিনি আরও বলেন, করোনা ভ্যাকসিন আমরা যা দিয়েছি, নিজেদের অর্থায়নে এটা প্রায় ১৭ হাজার কোটি  টাকা। সব মিলিয়ে ভ্যাকসিন দিতে আমাদের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা লেগেছে, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে। আর বিদেশ থেকে ১০ কোটি ভ্যাকসিন আমরা বিনামূল্যে পেয়েছি, তার দাম প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এটাও আমাদের দেশের অর্জন, প্রধানমন্ত্রীর অর্জন। কোনো দেশ ১০ কোটি ভ্যাকসিন ফ্রি পায়নি, যেটা বাংলাদেশ পেয়েছে। যেহেতু আমরা ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি, ভ্যাকসিন নষ্ট করিনি তাই এই ভ্যাকসিন পেয়েছি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো সঠিক মানের নয়, সেই প্রতিষ্ঠান আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা তিন হাজারে মতো প্রায় বন্ধ করেছি, প্রয়োজন হলে আরও বেশি বন্ধ করে দেবো যদি মানসম্পন্ন না হয়। সেদিকে আমরা খুবই সজাগ। যারা ভুয়া মেডিসিন তৈরি করছে বা নিম্নমানের ২০টি ফ্যাকটরি আমরা বন্ধ করেছি। যারা স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে তাদের আমরা ছাড় দেবো না। কাজেই এটা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া।

বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেছেন, কোনো কিছুই ভালো না এখানে। আবার উনিই বলেছেন, সমন্ত প্রাইভেট হাসপাতালকে, মেডিক্যাল কলেজকে সরকারি করে নেওয়া হোক, সরকারের কাছে হ্যান্ডওভার করা হোক। সরকার যদি ভালো নাই করে তাহলে প্রাইভেটকে কেন সরকারের কাছে হ্যান্ডওভার করতে বলেন। তিনি নিজেই স্বীকার করলেন, সরকারি হাসপাতাল ভালো কাজ করছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অনেক ভালো আছে তার প্রমাণ এই করোনা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।

৫ বছর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জুলাই মাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে ডব্লিউএইচও-এর কাছ থেকে। সেটা শিশুদের দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা হাতে নিয়েছি। জুলাইয়ের শেষের দিকে ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।